অনুষ্ঠানে সাংসদ। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন জেলা পরিষদের সদস্য বিপুল দাস-সহ এক ঝাঁক নেতা-কর্মী। রবিবার বিপুলবাবুর সঙ্গে পূর্বস্থলী ২ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তাপস দে, দলের ব্লক কমিটির সম্পাদক বঙ্কিম দাস, কালেখাঁতলা ২ পঞ্চায়েতের সদস্য পূর্ণিমা দাস এবং পূর্বস্থলী পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান গৌরী চৌধুরী বিজেপিতে যোগ দেন। মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তড়িৎ রায়ও এ দিন তৃণমূল ছেড়ে যান বিজেপিতে। কাটোয়ার জগদানন্দপুরে একটি অনুষ্ঠানে দলত্যাগীদের হাতে পতাকা তুলে দেন বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। ছিলেন বিজেপির রাজ্য কমিটির সম্পাদক রাজীব ভৌমিক, জেলা সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ প্রমুখ।
বিপুলবাবুর দাবি, ‘‘লোকসভা নির্বাচনে বহু নেতার বুথে জামানত বাজায়াপ্ত হয়েছে। বাংলার মানুষ আবার পরিবর্তন চাইছেন। আমিও সেই পরিবর্তনে মানুষের সঙ্গে সামিল হতে চাইছি।’’ যদিও এই নেতাদের চলে যাওয়া দলে কোনও প্রভাব ফেলবে না দাবি তৃণমূলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথের।
পূর্বস্থলী ২ ব্লকের তৃণমূল নেতা তপন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিপুলবাবুর দ্বন্দ্ব বহু পুরনো। দলের উপরতলা থেকে বারবার বার্তা দেওয়া হলেই কোন্দল মেটেনি। পঞ্চায়েত ভোটের পরে সহ সভাপতি হন তপনবাবু। তখন থেকে বিপুল-গোষ্ঠী কোণঠাসা হয়ে পড়ে, দাবি তৃণমূলেরই একাংশের। লোকসভা ভোট পরিচালনার ক্ষেত্রেও প্রাধান্য পান প্রাক্তন বিধায়ক তপনবাবু। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘দলে থেকে দলের সর্বনাশ করেছে এত দিন। এ বার গঙ্গাস্নান করব।’’ তবে মন্তেশ্বরের নেতা তড়িৎবাবুর দল ছাড়া নিয়ে অবাক হয়েছেন জেলার অনেক নেতা।
তড়িৎবাবু এ দিন দাবি করেন, ‘‘বিধায়ক সজল পাঁজার মৃত্যুর পরে মন্তেশ্বরের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল। মানুষের জন্য কাজ করতে না পারলে রাজনীতি করার কোনও দাম নেই।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘ব্লক তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে বারবার শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছিলাম। গলদের কথা দলের উর্ধ্বতন নেতৃত্বকে বোঝানোর চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। ভাল কাজ করার সুযোগ পেতেই দল ছাড়ালাম।’’ বিজেপির দাবি, বিপুলবাবু, তাপসবাবু, তড়িৎবাবুরা ২০০৪ সাল নাগাদ বিজেপি থেকে তৃণমূলে গিয়েছিলেন। এখন পরিস্থিতি বদলাতে আবার ‘ঘরে’ ফিরলেন তাঁরা।
বিজেপির রাজ্য সম্পাদক রাজীব ভৌমিক বলেন, ‘‘আরও অনেক নেতা-কর্মী আমাদের দলে যোগ দেবেন আগামীতে। দলের শক্তি ক্রমাগত বাড়ছে।’’