ভোটে দাঁড়ালে হারবে, নেতার পোস্টে বিতর্ক 

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অবিভক্ত সাংগঠনিক জেলার দীর্ঘদিনের সভাপতি ছিলেন নুরুল হাসান। জেলা রাজনীতিতে বরাবর রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটকের অনুগামী বলে পরিচিত তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৫৫
Share:

বিতর্কিত পোস্ট। নিজস্ব চিত্র

জেলার ছ’টি বিধানসভার বিধায়কদের ফের প্রার্থী করা হলে দল হারবে, সোশ্যাল মিডিয়ার এমন মন্তব্য পোস্ট করে বিতর্কে জড়িয়েছেন পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সদস্য নূরুল হাসান। শুক্রবার দুপুরে ওই পোস্টে ‘অস্বস্তি’তে পড়েন তৃণমূলের জেলা নেতারা। বিরোধীদের টিপ্পনী, ‘‘বাছাবাছির প্রয়োজন নেই, সব ক’টাতেই তৃণমূল হারবে।’’ তবে তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের মন্তব্য, “ভিত্তিহীন কথার কী জবাব দেব?”

Advertisement

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অবিভক্ত সাংগঠনিক জেলার দীর্ঘদিনের সভাপতি ছিলেন নুরুল হাসান। জেলা রাজনীতিতে বরাবর রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটকের অনুগামী বলে পরিচিত তিনি। ঘটনাচক্রে যে দিন মলয়বাবু পূর্ব বর্ধমান জেলায় দলীয় পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পেলেন, সে দিনই ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য় ওই পোস্ট ছড়িয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে নুরুল হাসান দাবি করেন, ‘‘দলের এক জন অনুগত কর্মী হিসেবে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানে সঠিক বার্তা তুলে দেওয়া আমার কর্তব্য। সে জন্য গত কয়েকদিন ধরে পূর্ব বর্ধমান ঘুরে বিধানসভার পরিস্থিতি উপলব্ধি করে ওই বার্তা দিয়েছি।’’

Advertisement

পোস্টে লেখা রয়েছে, ‘পূর্ব বর্ধমান জেলার ১৬টি আসনের মধ্যে ৬টি আসনে বিধানসভা নির্বাচনের পূর্বের প্রার্থীদের আবার যদি প্রার্থী করা হয় তা হলে হারবে’। কোন ছ’টি আসন, তা অবশ্য খোলসা করা নেই। এ নিয়ে জানতে চাইলে নুরুলের জবাব, ‘‘যা বলার, দলকে বলব।’’

তবে ওই নেতার ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ছ’টি বিধানসভার মধ্যে বর্ধমান দক্ষিণ, বর্ধমান উত্তর, ভাতার ও মেমারি বিধানসভার নাম নিশ্চিত ভাবেই রয়েছে। আরও দু’টি এমন বিধানসভা রয়েছে, যেখানে তৃণমূলের নয় বিধায়ক রয়েছে বামেদের। তবে সে ক্ষেত্রে বিধায়ক নয়, তৃণমূলের বিধায়ক পদপ্রার্থীর কথাই বলতে চেয়েছেন নুরুল, এমনই দাবি জেলা রাজনীতিতে তাঁর ঘনিষ্ঠ জনেদের। তেমনই এক দনের দাবি, ‘‘ওই ছ’টি বিধানসভা ছাড়া, পূর্ব বর্ধমানের গলসি, খণ্ডঘোষ, রায়না, মঙ্গলকোটকেও ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বিধানসভা বলে মনে করেন নুরুলদা।’’

কারণ? নুরুল-ঘনিষ্ঠরা তিনটি কারণের কথা বলছেন। তাঁদের বক্তব্য, এলাকা ঘুরে নুরুল হাসানের মনে হয়েছে, দলের একাংশের সঙ্গে জনগণের ‘দূরত্ব’ তৈরি হচ্ছে। বিধায়ক বা দলীয় পদপ্রার্থীরা দলীয় বা প্রশাসনিক কর্মসূচি ছাড়া এলাকায় পা রাখেন না বলে অভিযোগ পেয়েছেন তাঁরা। এ ছাড়া, দলের নিচুতলা পর্যন্ত ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের’ সমস্যা রয়েছে। নুরুলবাবুর কথায়, “লোকসভার ফলের দিকে তাকালেই বোঝা যাবে, কী ভাবে নিজের বুথে, ব্লকে দলের বড় বড় নেতারা হেরেছেন।’’

বিষয়টি জেনে বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি (বর্ধমান সদর) সন্দীপ নন্দীর টিপ্পনী, “হাওয়া বদলাচ্ছে সেটা টের পেয়ে গিয়েছেন তৃণমূলের নেতারা। সে জন্য প্রকাশ্যে ওই পোস্ট।’’ সিপিএমের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য উদয় সরকার বলেন, “বিধানসভা বাছাবাছির প্রয়োজন নেই। সব ক’টিতেই তৃণমূল হারবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement