tmc leader

Arrest: পড়শিকে পিটিয়ে ‘খুনে’ অভিযুক্ত নেতা, ধৃত তিন

নিহতের নাম জীবনকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় (৩৭)। তাঁর বাড়ি মন্তেশ্বরের বাঘাসন পঞ্চায়েতের হোসেনপুর গ্রামে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২২ ০৬:০৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

পড়শি যুবককে পিটিয়ে ‘খুন’ করার অভিযোগ উঠল পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরের এক তৃণমূল নেতা-সহ তাঁর পরিবারের চার জনের বিরুদ্ধে। নিহতের নাম জীবনকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় (৩৭)। তাঁর বাড়ি মন্তেশ্বরের বাঘাসন পঞ্চায়েতের হোসেনপুর গ্রামে। তাঁকে অনিচ্ছাকৃত খুনের অভিযোগ উঠেছে মন্তেশ্বরের তৃণমূল নেতা তথা মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ কর্মাধ্যক্ষ সুব্রত মুখোপাধ্যায়, তাঁর ভাই সুকান্ত মুখোপাধ্যায়, ভাতৃবধূ পম্পা মুখোপাধ্যায় ও তাঁদের নাবালক ছেলের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রাতে অভিযোগ দায়ের হয়। রাতেই পুলিশ সুকান্ত, তাঁর স্ত্রী ও নাবালক ছেলেকে গ্রেফতার করে।

Advertisement

যদিও সুব্রতর দাবি, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে মিথ্যা অভিযোগে তাঁদের ফাঁসানো হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ধ্রুব দাস বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলে, মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।’’

নিহতের দাদা অজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘রবিবার সকালে সুকান্তরা ওদের বাড়ির দেওয়ালে কাদা ছোড়ার অপবাদ দিয়ে ভাই জীবনকৃষ্ণ ও মাকে (‌রেবা বন্দ্যোপাধ্যায়) গালিগালাজ করছিল। জীবনকৃষ্ণ প্রতিবাদ করে। তখন সুকান্তরা স্বামী-স্ত্রী, তাঁদের নাবালক ছেলে এবং সুব্রত এসে ভাইয়ের বুকে-পেটে লাথি মারতে থাকে। বাঁশ ও উইকেট দিয়ে বেড়ধর মারে। আমি তখন বাইরে ছিলাম। পড়শিরা ভাইকে উদ্ধার করে মন্তেশ্বর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র নিয়ে যান।’’

Advertisement

অজয় জানান, সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে, জীবনকৃষ্ণকে বাড়ি ফিরিয়ে আনা হয়। কিন্তু মঙ্গলবার দুপুর থেকে তাঁর রক্ত-বমি শুরু হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সন্ধ্যা নাগাদ তাঁকে মন্তেশ্বর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে, ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। অজয়ের অভিযোগ, ‘‘সুকান্ত ও সুব্রতদের চার জনের মারের কারণেই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে।’’ মঙ্গলবার রাতেই তিনি মন্তেশ্বর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

নিহতের বাড়িতে বুধবার গিয়ে দেখা যায়, শোকের পরিবেশ। জীবনকৃষ্ণের বয়স্কা বিধবা মা রেবা বন্দ্যোপাধ্যায়,তাঁর দুই দিদি মিনু মুখোপাধ্যায় ও সোমা ভট্টাচার্যেরা দাবি করেন, ‘‘মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে নির্মম ভাবে মারধর করায় ছেলেটা মারা গেল! দোষীদের শাস্তি চাই।’’

যদিও অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা সুব্রতর দাবি, ‘‘জীবনকৃষ্ণ মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। সে জন্য বর্ধমানে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। যখন-তখন আমার পরিবারের লোকেদের উনি গালিগালাজ করতেন। কয়েক দিন আগে, এ নিয়ে ভাইপোর সঙ্গে তাঁর অশান্তি হয়। ভাই ও ভাইয়ের বউ তাদের অশান্তি ছাড়াতে যায়। মারধরের ঘটনা ঘটেনি। আমি বর্তমানে ওই বাড়িতে থাকি না। অশান্তির সময়ে আমি গ্রামের বাইরে ছিলাম। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে।’’ যদিও নিহতের দিদি মিনুর দাবি, ‘‘কয়েক বছর আগে ভাইয়ের মানসিক সমস্যা থাকলেও চিকিৎসা সুস্থ হয়ে গিয়েছিল।’’ মন্তেশ্বরের ব্লক তৃণমূল সভাপতি আজিজুল হকের মন্তব্য, ‘‘সুব্রতর পরিবারের বিরুদ্ধে কেন ওই অভিযোগ উঠেছে, আমরা খতিয়ে দেখছি।’’ ধৃত সুকান্ত ও পম্পাকে বুধবার কালনা আদালতে তোলা হয়। বিচারক সুকান্তের পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজত এবং পম্পাকে ১৭ জুন পর্যন্ত জেল হেফাজতে পাঠান। তাঁদের নাবালক সন্তানকে বর্ধমান জুভেনাইল আদালতে তোলা হয়। তাকে ১৭ জুন পর্যন্ত আড়িয়াদহ সরকারি হোমে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement