তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে বোমাবাজির অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র।
বাড়ির পাঁচিল তৈরির জন্য দাবি মতো তোলা না পেয়ে এক গৃহস্থের বাড়ির সামনে বোমাবাজির অভিযোগ উঠলো শাসক দলের তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের রায়ান গ্রামের। টুটুল মাজিলা নামে এক গৃহস্থের আঙুল বর্ধমান ১ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের যুব সভাপতি তথা বর্ধমান ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মানস ভট্টাচার্যের দিকে। অভিযোগ, রবিবার গভীর রাতে তাঁর বাড়ির সামনে বোমাবাজি করেন তৃণমূল নেতা। তিনি জানান, নিজের বাড়ির সীমানায় পাঁচিল তুলছেন। সে জন্যও ওই তৃণমূল নেতা ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। এই টাকা দিতে অস্বীকার করায় মানস তাঁকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন ওই পরিবারকে। তার পরেই রবিবার মানসের নেতৃত্বে মধ্যরাতে বোমাবাজি হয় বলে অভিযোগ।
এই ঘটনায় টুটুল বর্ধমান থানায় তৃণমূল নেতা মানস ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর আরও অভিযোগ, তাঁর পরিবারকে গ্রামে একঘরে করে রাখার প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। যে কোনও মুহূর্তে তিনি খুন হয়ে যেতে পারেন বলেও আশঙ্কা করেছেন টুটুল। এই অভিযোগের পর ঘটনাস্থলে যায় বর্ধমান থানার পুলিশ। এ নিয়ে যুব তৃণমূল নেতা মানস জানান, তাঁকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ফাঁসানো হচ্ছে। তাঁর পাল্টা দাবি, টুটুলের পারিবারিক সম্পত্তিগত বিবাদ রয়েছে। তাঁদের আবেদনের ভিত্তিতে প্রথমে ক্লাব ও পরে পঞ্চায়েত থেকে বিষয়টি মিটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। আগামী ২৪ এপ্রিল পঞ্চায়েত থেকে জমি মাপার দিন ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। সেটা বানচাল করতেই উনি এই কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
এ নিয়ে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাসের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এই ঘটনার বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে কেউ অন্যায় করলে বা টাকা দাবি করলে থানায় অভিযোগ জানান। দল কখনও এই সব বরদাস্ত করে না।’’
উল্লেখ্য, গত বছরের নভেম্বরে এই টুটুলকে ফোনে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে এই মানস ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে। সেই মোবাইলের অডিয়ো ভাইরাল হয় নেটমাধ্যমে। সে বারও পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। কিন্তু অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি পুলিশ বলে অভিযোগ। টুটুল পেশায় শিক্ষক। জঙ্গিপুর গর্ভমেন্ট পলিটেকনিক কলেজের শিক্ষকতার চাকরি করেন। তিনি বলেন, ‘‘আমার গোটা পরিবার চরম আতঙ্কিত।’’ এ নিয়ে বিজেপি জেলার সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, ‘‘সামান্য একটা পাঁচিল তৈরি করতে গেলে ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে তৃণমূল নেতাকে! তাহলে বাড়ি করতে গেলে কত টাকা দিতে হবে বুঝুন। এই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ আগেও হয়েছে। কিন্তু প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।’’