বর্ধমানের খাগড়াগরে জাল নোট-কাণ্ডে এ বার নাম জড়াল শাসকদলেরও। জাল নোটের কারবার চালানোর অভিযোগে ধৃত গোপাল সিংহের সঙ্গে তৃণমূল নেতাদের ছবি প্রকাশ্যে আসার পরেই শাসকদলকে বিঁধতে শুরু করেছেন বিরোধীরা। যদিও সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের স্পষ্ট বক্তব্য, জাল নোটের কারবারের সঙ্গে দলের নেতাদের কোনও যোগই নেই।
বৃহস্পতিবার গোপন সূত্রে খবর পেয়ে খাগড়াগড়ের পূর্ব মাঠ পাড়ার ওই জাল নোটের কারখানায় হানা দেয় বর্ধমান থানার পুলিশ। ওই কারখানা থেকে উদ্ধার হয়েছে ১২,৫০০ টাকার নকল নোট, নোট ছাপার মেশিন এবং অন্যান্য সরঞ্জাম। ওই ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গোপাল ছাড়া বাকি দু’জনের নাম দীপঙ্কর চক্রবর্তী ও বিপুল সরকার। দীপঙ্করের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। গোপাল আর বিপুল বর্ধমান শহরেরই বাসিন্দা। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ৪-৫ মাস আগে পূর্ব পাড়ায় সিরাজুল ইসলামের বাড়ি ভাড়া নেন গোপাল। তাঁর সঙ্গে থাকতেন স্ত্রী, শাশুড়ি ও এক জন পরিচারিকা।
জাল নোট কারবারের মূল চক্রী হওয়ার অভিযোগে গোপাল গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পূর্ব পাড়ায়। এ নিয়ে পাড়ায় নানাবিধ গুঞ্জনের মাঝেই গোপালের একটি ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে দেখা গিয়েছে, বর্ধমান শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডে একটি খো খো খেলার মঞ্চে তৃণমূল নেতাদের পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছেন গোপাল। ছবিতে যে তৃণমূল নেতাদের গোপালের সঙ্গে দেখা গিয়েছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বর্ধমান জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস, জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন যুব সভাপতি রাসবিহারী হালদার। সেই ছবি দেখিয়েই বিজেপি দাবি করা শুরু করেছে, জাল নোটের কারবারে তৃণমূলের নেতারাও যুক্ত।
বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, ‘‘আমরা আগেই আশঙ্কা করেছিলাম, তৃণমূল এই কারবারের সঙ্গে যুক্ত আছে। সেটাই এখন সত্যি হল। খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডেও তৃণমূলের যোগ পাওয়া গিয়েছিল। এই ছবিই প্রমাণ করে, তৃণমূলের মদতে জাল নোট তৈরির কারখানা চলছিল।’’
এই অভিযোগকে গুরুত্বই দিতে চাইছে না শাসকদল। প্রসেনজিৎ বলেন, ‘‘এখন সবাই তৃণমূল। তাই, খেলার মাঠে আমাদের পাশে কে দাঁড়িয়ে থাকবে, তা জানার কথা নয়। মিথ্যে অভিযোগ করাই বিজেপির কাজ। পুলিশ তদন্ত করছে। সব সত্যি বার হবে।’’