Coronavirus

তথ্য তুলে ধরে পাল্টা প্রচারের ভাবনা তৃণমূলে

মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি স্বপন দেবনাথ এই ভিডিয়ো কনফারেন্সের আয়োজন করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২০ ০৩:২৪
Share:

নেতাদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্স স্বপন দেবনাথের। নিজস্ব চিত্র

রেশন বণ্টনে ‘দুর্নীতি’র অভিযোগ থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরাতে রাজ্যের ‘অনীহা’— এমন নানা অভিযোগে ইতমধ্যে সরব হয়েছে বিজেপি। প্রশাসনিক নানা দফতরের সামনে বিক্ষোভ থেকে স্মারকলিপি দেওযার কর্মসূচি চলছে। নানা দাবিতে পথে নেমেছে বিভিন্ন বাম সংগঠনও। এই পরিস্থিতিতে সরকারি পরিসংখ্যান তুলে ধরে পাল্টা প্রচার করতে হবে, ‘ভিডিয়ো কনফারেন্স’-এর মাধ্যমে বৈঠক করে এমন সিদ্ধান্ত নিলেন জেলা তৃণমূলের নেতারা।

Advertisement

মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি স্বপন দেবনাথ এই ভিডিয়ো কনফারেন্সের আয়োজন করেন। তাতে যোগ দেন দলের জেলা পরিষদ সদস্য, বিধায়ক, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, পুরসভার চেয়ারম্যান থেকে ছাত্র-যুব সংগঠনের নেতারা। তৃণমূলের নানা সূত্রের দাবি, বৈঠকে অনেক নেতাই জানান, বিরোধীরা যে ভাবে নানা অভিযোগ তুলছে, তার পাল্টা প্রচার করা প্রয়োজন। স্বপনবাবু জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার রেশনের ব্যবস্থা-সহ নানা পদক্ষেপ করেছে। সে সবের পরিসংখ্যান জনতার কাছে তুলে ধরতে হবে বিধিনিষেধ মেনেই। পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত পরিসংখ্যান তৈরির পরামর্শ দেন তিনি।

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকেই কিছু পরিসংখ্যান তুলে ধরেন জেলা পরিষদ সদস্য বাগবুল ইসলাম। তিনি দাবি করেন, জেলার জনসংখ্যা ৫৩ লক্ষ ২৫ হাজার ৩৫৭ জন। এখনও পর্যন্ত পাঁচ রকম রেশন কার্ড ও ‘ফুড কুপন’ মিলিয়ে মোট ৪৭ লক্ষ ৯৬ হাজার ৩৭৭ জনকে রেশন-সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। ‘জিআর’ এবং ‘স্পেশাল জিআর’ বিলি করা হয়েছে ৯০ হাজার। জেলা পরিষদ অঙ্গনওয়াড়ি এবং ‘ভিলেজ রিসোর্স’ কর্মীদের দু’দফায় ১৪ হাজার ‘মাস্ক’ দিয়েছে। আরও সাত হাজার দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। অন্য রাজ্য বা জেলা থেকে আসা প্রায় ৪০ হাজার শ্রমিকের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে খাদ্যসামগ্রী। কালনা ও পূর্বস্থলী থেকে ৩২টি বাসে করে ভিন্ জেলার তাঁত-শ্রমিকদের বাড়ি ফেরানো হয়েছে।

Advertisement

তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে গলসির জনপ্রতিনিধিরা জানান, ঝড়-বৃষ্টিতে ধান তুলতে চাষিরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন। পর্যাপ্ত শ্রমিকও মিলছে না। জল-কাদায় হারভেস্টর যন্ত্র নামাতে সমস্যা হচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব ভিন্ রাজ্যের শ্রমিক আনার দাবি জানান তাঁরা। বোরো ধানের ক্ষতি ও এলাকা থেকে কিছু মানুষকে ভিন্ জেলায় ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থার আর্জি জানান মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আহমেদ শেখ। কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু অভিযোগ করেন, কিছু ডিলার রেশনে সামগ্রী কম দিচ্ছেন। তাঁদের একটি তালিকা তুলে দেওয়া হয়েছে মহকুমা প্রশাসনকে। বর্ধমান সদর-সহ কয়েকটি এলাকার জনপ্রতিনিধিরা ডিজিটাল রেশন কার্ডের সমস্যার কথা জানান। স্বপনবাবু তাঁদের খাদ্য দফতর ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বিষয়গুলি নিয়ে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।

জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি দেবু টুডু অভিযোগ করেন, ‘‘রেশন নিয়ে সামান্য ছুতো পেলেই নেমে পড়ছেন বিরোধীরা। আমাদের এখানে আটকে থাকা অন্য এলাকার শ্রমিকদের কোনও কিছু নিয়ে অভিযোগ নেই। অথচ, আমাদের এখান থেকে ভিন্ রাজ্যে গিয়ে আটকে থাকা শ্রমিকেরা খেতে পাচ্ছেন না বলে জানাচ্ছেন। আমরা সোশ্যাল মিডিয়াকে হাতিয়ার করে পাল্টা প্রচারে নামব।’’ স্বপনবাবুরও অভিযোগ, ‘‘সরকার অনেক কিছু করা সত্ত্বেও বিরোধীরা অপপ্রচার করছে। সোশ্যাল মিডিয়া-সহ নানা জায়গায় আমদেরও সরব হতে হবে।’’

বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি ধনঞ্জয় হালদারের প্রতিক্রিয়া, ‘‘তৃণমূল কী করছে বা করবে, জানি না। তবে রেশনের দুর্নীতি, পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশার মতো বিষয়গুলি নিয়ে টানা আন্দোলন চালাচ্ছি আমরা। শাখা সংগঠনগুলিও পথে নামছে। কর্মসূচি চলবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement