মল্লিকাকে খুনের হুমকি, অভিযুক্ত সেই নিত্যানন্দ

পুরসভা সূত্রে জানা যায়, এ দিন পুরসভায় পুরপ্রধানের পাশেই বসেছিলেন নিত্যানন্দবাবু। তখনই ঘরে ঢোকেন মল্লিকাদেবী। তাঁর অভিযোগ, তাঁর পুকুর ও জায়গা দখল করে পুরসভা রাস্তা তৈরি করছে, এ কথা জানাতেই নিত্যানন্দবাবু তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৭ ০০:৪৫
Share:

গুসকরার প্রবীণ কাউন্সিলর নিত্যানন্দ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

কখনও পুরসভা চত্বরে হাতাহাতি বেধেছে দু’জনের, কখনও একে অপরের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অস্বচ্ছতার অভিযোগ করেছেন। এ বার গুসকরার প্রবীণ কাউন্সিলর নিত্যানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করলেন দলেরই আর এক কাউন্সিলর মল্লিকা চোঙদার।

Advertisement

সোমবারের এই ঘটনায় প্রথমে মুখ খুলতে চাননি পুরপ্রধান বুর্ধেন্দু রায়। পরে শুধু বলেন, ‘‘কী বলব? লিখে দিন, কিছুই হয়নি।’’

পুরসভা সূত্রে জানা যায়, এ দিন পুরসভায় পুরপ্রধানের পাশেই বসেছিলেন নিত্যানন্দবাবু। তখনই ঘরে ঢোকেন মল্লিকাদেবী। তাঁর অভিযোগ, তাঁর পুকুর ও জায়গা দখল করে পুরসভা রাস্তা তৈরি করছে, এ কথা জানাতেই নিত্যানন্দবাবু তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। ওই ঘরে থাকা এক কর্মীর মধ্যস্থতায় মারামারি বাধেনি।

Advertisement

এরপরেই মল্লিকাদেবী বাড়ি ফিরে পূর্ব বর্ধমানের জেলা পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবালকে পুরো বিষয়টি জানান। আউশগ্রাম থানায় লিখিত ভাবে নিত্যানন্দবাবুর বিরুদ্ধে খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেন তিনি। মল্লিকাদেবী জানান, দুষ্কৃতীদের মতো আচরণ করছেন কাউন্সিলর নিত্যানন্দ চট্টোপাধ্যায়। বেশ কয়েকবার তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে খুনের হুমকিও দিয়েছেন। পুলিশকে দেওয়া চিঠিতে সোমবার তাঁর আরও দাবি, নিত্যানন্দবাবু পিস্তল বের করে তাঁকে হেনস্থা করেছেন। রাজনৈতিক পদের অপব্যবহারও করছেন। মল্লিকাদেবী বলেন, “আমি পুরো ঘটনা দলকে জানিয়েছি।”

তবে নিত্যানন্দবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ এই প্রথম নয়। এর আগেও পুরসভার অন্দরেই নিত্যানন্দবাবু মল্লিকাদেবীর চুলের মুঠি ধরে টেনেছিলেন বলে অভিযোগ। পাল্টা অভিযোগে নিত্যানন্দবাবুর দাবি ছিল, তাঁকে চড় মেরেছিল মল্লিকাদেবী। পরস্পরের বিরুদ্ধে আউশগ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। পুরকর্মীরা জানান, বছর দেড়েক আগেওই ঘটনার সময় মল্লিকাদেবী আর পুরপ্রধান ছিলেন এক শিবিরে। আর এখন নিত্যানন্দ ভিড়েছেন পুরপ্রধানের দলে। মল্লিকাদেবীর সঙ্গে তাঁদের দূরত্ব বেড়েছে। এর মাঝে আবার নিত্যানন্দবাবু পুরসভায় নিজের ঘরে কাউন্সিলদের পিস্তল বের করে দেখিয়েছিলেন। সে ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই বিতর্ক দেখা দেয়। ওই কাউন্সিলরের যদিও দাবি, লাইসেন্স রয়েছে তাঁর। এ দিন নিত্যানন্দবাবু বলেন, “উনি বারবার আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছেন। কেন করছেন সত্যিই বুঝতে পারছি না। সোমবার তো আমি পুরসভাতেই যাইনি।” বিরোধী ও পুরকর্মীরা জানিয়েছেন, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চোঙদার পুকুরে জায়গা দখল নিয়ে রবিবারই মল্লিকাদেবী ও নিত্যানন্দবাবুর মধ্যে বাদানুবাদ হয়।

সিপিএমের গুসকরা শহর লোকাল কমিটির সম্পাদক নারায়ণ ঘোষ বলেন, “পুরসভায় ওই দুই কাউন্সিলরের কাণ্ডকারখানা গুসকরাবাসী হিসেবে খুবই লজ্জার।” পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল জানান, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement