করোনা নয়, বিজেপিকে আটকাতে ‘লকডাউন’ করছে তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকার—বুধবার এমনই কটাক্ষ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর সংযোজন: ‘‘বিধানসভা ভোট এগিয়ে আসায় মানুষের জন্য দরদ উথলে উঠছে তৃণমূল নেতাদের।’’ পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামে এ দিন দলীয় কর্মসূচিতে গিয়ে তাঁর আরও দাবি, ‘‘এর পরে মানুষই তৃণমূলকে ‘লকডাউন’ করে দেবেন।’’
এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ কেতুগ্রামে একটি লজে পূর্ব বর্ধমান জেলার মণ্ডল সভাপতি, পর্যবেক্ষক ও জেলা পদাধিকারীদের নিয়ে ঘণ্টা দু’য়েক বৈঠক করেন দিলীপবাবু। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধানসভা ভোটে দলের রণকৌশল নিয়ে আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। বুথ কমিটিকে শক্তিশালী করতে নানা পদক্ষেপের কথা জানিয়েছেন নেতৃত্ব। বিজেপি সূত্রের দাবি, বৈঠকে নানা জায়গায় দলের ‘কোন্দল’ নিয়েও কেউ-কেউ সরব হন। তা মেটানোর নির্দেশ দিয়েছেন নেতৃত্ব। বৈঠক চলাকালীন বাইরে বহু বিজেপি কর্মী জড়ো হন। পরে দিলীপবাবু অনেকের হাতে দলের পতাকা তুলে দেন। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, এ দিন প্রায় ছ’শো কর্মী-সমর্থক তৃণমূল ছেড়ে তাঁদের দলে যোগ দিয়েছেন।
এর পরেই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দিলীপবাবু অভিযোগ করেন, ‘‘তৃণমূল গোটা রাজ্যে লুট চালাচ্ছে। আমরা এখনও চুপচাপ থাকলেও এ বার মানুষের ইচ্ছা অনুসারে প্রতিবাদে নামব। তখন ওরা পালানোর পথ পাবে না।’’ কয়েকদিন আগে কেতুগ্রামে দলের সম্মেলনে রাস্তা খারাপের অভিযোগ শুনে জেলা প্রশাসনের কর্তাকে ফোন করে মেরামতের কথা বলেছিলেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। এ দিন সে প্রসঙ্গ টেনে দিলীপবাবুর দাবি, ‘‘ভোট সামনে আসছে বলে দলীয় মঞ্চ থেকে বীরভূমের তৃণমূল নেতা ফোন করে বেহাল রাস্তা ঠিক করে দেওয়ার কথা বলছেন। এত দিন মনে ছিল না? ওঁর (অনুব্রত) ফোনে কোনও সমস্যার সমাধান হয় বলে আমার জানা নেই।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘বোলপুরে চায়ের দোকানে গেলে ওঁর (অনুব্রত) লোকজন ভয় দেখিয়ে দোকান বন্ধ করে দেয়। এ ভাবে আমাদের আটকাতে পারবে না।’’ মঙ্গলকোটের কৈচরে মঙ্গলবার দলের সভাকে কেন্দ্র করে ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ প্রসঙ্গে তিনি জানান, কোনও ভুল বোঝাবুঝি হয়ে থাকলে মিটিয়ে দেওয়া হবে।
দিলীপ ঘোষের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় এ দিন অনুব্রত মণ্ডলের বক্তব্য, ‘‘আমরা কোনও চায়ের দোকান বন্ধ করি না। ওঁর (দিলীপ) চা খাওয়ার অভ্যাস নেই। আমি যেটুকু জানি, গোমূত্র খান।’’ এ দিন তাঁদের দল থেকে কেউ বিজেপিতে গিয়েছেন বলে কেতুগ্রামের তৃণমূল নেতৃত্ব মানতে চাননি। দলের কেতুগ্রাম ২ ব্লক সভাপতি বিকাশ মজুমদারের দাবি, ‘‘নিজেদের লোকজনকেই তৃণমূল সাজিয়ে যোগদান করিয়ে বিজেপির স্থানীয় নেতারা সম্মান বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন।’’