হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতরা। —নিজস্ব চিত্র।
ভোট পরবর্তী হিংসায় উত্তপ্ত হল পূর্ব বর্ধমানের গলসি। রাজনৈতিক সংঘর্ষে ভাঙচুর হল বেশ কয়েকটি বাড়ি ও দোকানঘর। লাঠি, রড দিয়ে হামলার অভিযোগ উঠল শাসকদলের বিরুদ্ধে। ঘটনায় আহত হয়েছেন দুই পক্ষের মোট ছয় জন। তাঁদের মধ্যে চার জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়েছে। যদিও বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে অশান্তির নেপথ্যে বিজেপি, কংগ্রেস এবং সিপিএমের ষড়যন্ত্র দেখছে তৃণমূল।
সিপিএম এবং কংগ্রেসের অভিযোগ, শুক্রবার বেলা ১১টা নাগাদ আচমকা শাসকদলের লোকেরা তাদের কর্মীসমর্থকদের উপর চড়াও হন। এক মহিলা-সহ চার সিপিএম সমর্থকের উপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। অন্য দিকে, শাসকদলের অভিযোগ, তৃণমূলের পারাজ গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য জাহাঙ্গির শেখের উপর ছুরি নিয়ে হামলা চালিয়েছেন সিপিএমের লোকজন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গলসি-১ ব্লকের পারাজ গ্রাম পঞ্চায়েতের কড়কডাল গ্রামে। ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয় পুলিশ বাহিনী। পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে পুরসা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানে চার জনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর করানো হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, ঘটনায় আহত হয়েছেন সিপিএমের সাগর মল্লিক, রাফিজুল মল্লিক, মফিজুর মল্লিক, তাজমিরা মল্লিক এবং মুক্ত মল্লিক। তা ছাড়া আহতের তালিকায় রয়েছেন তৃণমূল থেকে সদ্য নির্বাচিত পারাজ গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য জাহাঙ্গির।
ওই গ্রামের বাসিন্দা তথা সিপিএমের সমর্থক আনারুল মল্লিক বলেন, ‘‘ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই আমরা বাড়িছাড়া ছিলাম। শুক্রবার তৃণমূলের জাহাঙ্গিরের নেতৃত্বে জনা পঞ্চাশ লোক আমাদের বাড়িগুলোতে হামলা চালান। বাড়িঘর ভেঙে দেওয়া হয়। সোনাদানা-সহ বাড়ির আসবাবপত্র লুট করেন। আমাদের মারধর করা হয়েছে।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক সৈয়দ হোসেন বলেন, ‘‘আমাদের পঞ্চায়েত প্রার্থী গোলাম মুর্তজা জখম হয়েছেন। তাঁর বাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি লুটপাট হয়েছে বাড়ি। সবই করেছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা।’’ যদিও সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, ‘‘সিপিএম-সহ বিরোধীরা নির্বাচনে পরাজিত হয়ে এলাকাকে অশান্ত চেষ্টা করছে। সিপিএমের আক্রমণে আমাদের এক জন পঞ্চায়েত সদস্য জখম হয়েছেন।’’ ওই এলাকার তৃণমূল নেতা শেখ আনোয়ার আজমের দাবি, ‘‘ সিপিএমের সব অভিযোগ মিথ্যা। সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেস মিলে এলাকায় গন্ডগোল শুরু করেছে।’’