এই রাস্তাতেই বিপত্তি। শুক্রবার দোমোহানিতে। নিজস্ব চিত্র
পিক-আপ ভ্যানের ধাক্কায় উল্টোল বাঁশ বোঝাই ঠেলাগাড়ি। তাতে চাপা পড়ল তিনটি শিশু। তাদের অবস্থা এই মুহূর্তে স্থিতিশীল। শুক্রবার সকালে বারাবনির এই দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে দোমোহানি-চুরুলিয়া রোড প্রায় দু’ঘণ্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, রাস্তা বেহাল। তাই প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ দোমোহানি-চুরুলিয়া রোড ধরে বাঁশ বোঝাই একটি ঠেলাগাড়ি যাচ্ছিল। সেটিকে পিছন থেকে সজোরে ধাক্কা মারে একটি পিক-আপ ভ্যান। টাল সামলাতে না পেরে ঠেলাগাড়িটি রাস্তার পাশে উল্টে পড়ে। ওই সময় সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা আট থেকে দশ বছরের তিন জন শিশু বাঁশ বোঝাই ঠেলাগাড়িটির তলায় চাপা পড়ে। ওই শিশুরা এলাকারই বাসিন্দা। এলাকাবাসী দ্রুত ওই শিশুদের উদ্ধার করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। পরিবার সূত্রে জানা যায়, ওই শিশুদের কেউ হাতে চোট পেয়েছে, কারও বা নাক ফেটে রক্ত বেরিয়েছে। এক শিশুর পরিবারের তরফে শবরী দে বলেন, ‘‘রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ। আজকে অল্পের উপর দিয়ে গিয়েছে। যে কোনও দিন বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’’
দুর্ঘটনার পরেই রাস্তার অবস্থা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করে শুরু হয় অবরোধ। এর জেরে ওই রাস্তা দিয়ে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষজন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বারাবনি থানার পুলিশ। অবরোধ তুলে নেওয়ার অনুরোধ করেন পুলিশকর্মীরা। তবে তাতে বাসিন্দারা আমল দেননি।
এলাকাবাসীর ক্ষোভ, প্রায় চার বছর ধরে রাস্তাটি বেহাল। সম্প্রতি রাস্তা কেটে আমুলিয়া জলপ্রকল্পের পাইপলাইন পাতা হয়েছে। এর পরে রাস্তা আরও খারাপ হয়েছে। প্রায়ই স্কুটার, মোটরবাইক ওল্টানো, পথচারীদের জখম হওয়ার ঘটনা ঘটছে। পাশাপাশি, রাতে অতিরিক্ত মাল বোঝাই ট্রাক যাতায়াত করায় বিপদ আরও বেড়েছে বলে দাবি।
এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় বাসিন্দা গোরাচাঁদ লাহা বলেন, ‘‘আমরা স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অনেক বার রাস্তা সংস্কারের আবেদন করেছি। কিন্তু কোনও লাভ হচ্ছে না।’’ এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, দোমোহানি বাজারের বাঁ দিকে চুরুলিয়া রোডের শুরু থেকে পানুড়িয়া মোড় পর্যন্ত এলাকাটিকে বলে না দিলে বোঝার উপায় নেই যে, সেটি রাস্তা। রাস্তার মাঝে বিশাল গর্ত তৈরি হয়েছে। বৃষ্টির জলে সে গর্ত বোঝা যাচ্ছে না।
এ দিকে, এ দিন রাস্তা অবরোধের জেরে পথচারী ও যান চালকেরা অন্য রাস্তা ধরে যাতায়াত করতে শুরু করেন। সাড়ে ১১টা নাগাদ তৃণমূল পরিচালিত দোমোহানি পঞ্চায়েতের প্রধান রুমা সিংহের উদ্যোগে একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থলে আসে। ওই দলটির তরফে সন্তোষ সিংহ বলেন, ‘‘রাস্তা সংস্কারের জন্য পূর্ত দফতর অর্থ বরাদ্দ করেছে। বর্ষায় রাস্তার কাজ শুরু করা যাবে না। তবে দু’-এক দিনের মধ্যে রাস্তাটিকে চলাচলের উপযোগী করে তোলা হবে।’’ এ বিষয়ে পুলিশও পদক্ষেপ করার আশ্বাস দেয়। এর পরেই ওঠে রাস্তা অবরোধ। রাস্তা দ্রুত সংস্কার করা হবে, আশ্বাস জেলা পরিষদের সদস্য অসিত সিংহের।