—প্রতীকী চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হতেই নিজেদের নির্বাচনের লড়াইয়ের ছক কষা শুরু করেছে রাজনৈতিক দলগুলি। সঙ্গে শুরু হয়েছে তরজাও। ২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটের স্মৃতি থেকে বিরোধীদের আশঙ্কা, তৃণমূল সন্ত্রাস করতে পারে। অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূল এ বার জোর দিচ্ছে ‘উন্নয়ন’ এবং কেন্দ্রীয় ‘বঞ্চনা’নিয়ে প্রচারে।
গত পঞ্চায়েত ভোটে জেলায় পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে ১৬১-র মধ্যে মাত্র ৬৬টিতে এবং পঞ্চায়েত স্তরে ৮৩৩টি আসনের মধ্যে মাত্র ২৯৯টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছিল। অন্য আসনগুলিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছিল তৃণমূল। ভোট হওয়া আসনগুলির বেশির ভাগ আসলেও জেতে তৃণমূল। বিরোধীরা অভিযোগ করেছিল, মনোনয়ন তোলা, জমা দেওয়া থেকে ভোটগ্রহণের দিন পর্যন্ত চরম সন্ত্রাস তৈরি করেছিল তৃণমূল। তৃণমূল অবশ্য অভিযোগ আমলদিতে নারাজ।
বিরোধী দলগুলির নেতাদের আশঙ্কা, এ বারও তেমন সন্ত্রাস যে হবে না, তা হলফ করে বলা যাচ্ছে না। এ বার তেমনটা ঘটলে, সব ক’টি বিরোধী দলই প্রতিরোধের ডাক দিচ্ছে। বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দিলীপ দে যেমন বলেন, “আমরা কোনও রকম প্ররোচনা দিই না, দেবও না। কিন্তু তৃণমূল প্ররোচিত করলে হাত গুটিয়ে বসেও থাকব না। মানুষ আমাদের সঙ্গে আছে।” হামলা হলে মানুষকে সঙ্গে নিয়ে ‘পাল্টা জবাবের’ কথা বলছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায় এবং কংগ্রেসের জেলা সভাপতিদেবেশ চক্রবর্তীও।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রচার-কৌশল নিয়েও আলোচনা চলছে। গৌরাঙ্গের অভিযোগ, “পঞ্চায়েত ব্যবস্থার কেন্দ্রীকরণ করা হয়েছে। সবই নবান্ন থেকে নিয়ন্ত্রিত। জমির অধিকার কেড়ে নেওয়া, বেসরকারিকরণের তোড়জোড়, নাগরিক ক্ষেত্রে নৈরাজ্য, দুর্নীতি— এগুলিই আমাদের প্রচারের প্রধান বিষয় হবে।” দলের কেন্দ্র ও রাজ্য স্তরের নেতৃত্বও প্রচারে জেলায় আসবেন বলে জানিয়েছেন গৌরাঙ্গ। তৃণমূল এবং বিজেপি একই মুদ্রার দু’টি পিঠ বলেও দাবি তাঁদের।সিপিএমের এমন দাবি উড়িয়ে দিচ্ছে কেন্দ্র ও রাজ্যে দুই ক্ষমতাসীন দলই। বিজেপির জেলা সভাপতি দিলীপের দাবি, রাজ্য সরকার এবং পঞ্চায়েত স্তরে দুর্নীতি, বেহাল নাগরিক পরিষেবাই তাঁদের প্রচারের মূল বিষয় হবে। প্রচারে রাজ্য স্তরের বিভিন্ন নেতা, বিধায়ক, সাংসদদেরও থাকার কথা বলেজানিয়েছেন দিলীপ।
বিরোধীদের অভিযোগ আমল দেননি তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। তাঁর পাল্টা দাবি, “কেন্দ্রের বেসরকারিকরণ নীতির ফলে জেলার অর্থনীতিতে ধস নামা, বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের টাকা কেন্দ্রের আটকে রাখার মতো বিষয়গুলির সঙ্গে, রাজ্য সরকারের উন্নয়নের কথা মানুষের সামনে তুলে ধরা হবে প্রচারে।” নরেন্দ্রনাথ জানান, শনিবার দলের জেলার কোর কমিটির বৈঠক হবে। সেখানে জেলায় দলের নির্বাচনী কৌশল ঠিক করা হবে। পাশাপাশি, জেলায় দলের মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদ ও পুরসভার মেয়র প্রচারে যোগ দেবেন প্রাথমিক ভাবে। পরে, রাজ্য স্তরের নেতাদেরও প্রচারে আনা হবে। আপাতত এমনটাই ঠিক রয়েছে বলেজানান নরেন্দ্রনাথ।