কার্তিকের থাকা। নিজস্ব চিত্র।
কোথাও একশো ফুটের বুর্জখলিফা, কোথাও ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল। কাটোয়ায় কার্তিক পুজোর মণ্ডপ এ বার বৈচিত্র্যে ভরা। শুধু সৌধ নয়, বাঁকুড়া ডোকরা শিল্প থেকে স্থানীয় হস্তশিল্পের প্রদর্শনও রয়েছে মণ্ডপে। আলোয় সেজে উঠছে শহরের নানা প্রান্ত।
কাল, বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হবে ঐতিহ্যবাহী কার্তিক পুজো। করোনার জেরে গত দু’বছর প্রশাসন শোভাযাত্রার অনুমতি দেয়নি। এ বছর রাশ আলগা হতেই আয়োজনে কোনও খামতি রাখতে চাইছেন না উদ্যোক্তারা। কার্যত নাওয়া-খাওয়া ভুলে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা। বড় বাজেটের পুজো কমিটিগুলি তৈরি একে অপরকে টেক্কা দিতে।
শহরের কাছারিপাড়ার ঝঙ্কার ক্লাব বাঁকুড়ার ডোকরা শিল্পকর্ম দিয়ে পুকুরের উপরে বড়সড় মণ্ডপ গড়েছে। ভিতরেও রয়েছে ডোকরার নানা নিদর্শন। মণ্ডপে যাওয়ার প্রতিটি রাস্তা আলোর গেট দিয়ে সাজানো হয়েছে। পুকুরের জলে সাজানো হয়েছে কৃষ্ণের কালিয়া দমনের কাহিনি। ক্লাব সম্পাদক কালীচরণ চট্টোরাজ বলেন, ‘‘থিম পুজোর পাশাপাশি কার্তিক লড়াইয়ে যোগ দিই আমরা। পৌরাণিক কাহিনি নির্ভর করে থাকা সাজানো হয়। এ বার চন্দননগরের আলো, রকমারি বাজনা নিয়ে শোভাযাত্রা করা হবে।’’ পাবনা কলোনির দেশবন্ধু বয়েজ ক্লাব প্রায় ৩০ বছর ধরে কার্তিক পুজো করে। আগে বাদ্য-বাজনা নিয়ে শোভাযাত্রায় যোগ দিত তারা। ২০০৬ সাল থেকে অবশ্য শুধু প্রতিমা গড়েই পুজো হয়। উদ্যোক্তারা জানান, শীতকালে বাঙালিদের পছন্দের জায়গা ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল। এ বার পুজোয় বড়সড় জায়গা ভিক্টোরিয়ার আদলেই মণ্ডপ গড়েছেন তাঁরা। দেশবন্ধু বয়েজ ক্লাবের কর্মকর্তা সোমনাথ চৌধুরী বলেন, ‘‘আশা করছি মণ্ডপ দেখতে দর্শনার্থীদের লম্বা লাইন পড়বে।’’
সার্কাস ময়দানের ইউনিক ক্লাব আবার বুর্জ খলিফা দেখাবে কাটোয়াবাসীকে। বাহারি আলোয় সেজে উঠছে একশো ফুটের বুর্জ খলিফা। কিছুটা দূরে বিদ্যাসাগরপল্লিতে গড়ে তোলা হচ্ছে গুজরাটের বিখ্যাত সোমনাথ মন্দির। জয়শ্রী সঙ্ঘের থিম, শৈশবের স্মৃতি। পটচিত্রের মাধ্যমে রূপসি বাংলার রূপ, শৈশবের খেলাধুলার স্মৃতি তুলে ধরা হয়েছে। ছোটদের সঙ্গে প্রবীণদের মন কাড়বে এই মণ্ডপ, দাবি উদ্যোক্তাদের। পানুহাটের নিউ আপনজন ক্লাব দরমার বেড়া দিয়ে মণ্ডপ সাজিয়েছে। সম্পাদক উত্তম দেবনাথ বলেন, ‘‘আশা করি পুজোর আয়োজন দর্শকদের ভাল লাগবে।’’ ইয়ং বয়েজ ক্লাব আবার বাঁশ, ঝুড়ি, কুলো, কড়ি দয়ে মণ্ডপ সাজিয়েছে। জীবনযাত্রার এ কাল, সে কাল ফুটিয়ে তোলা হয়েছে পুতুলের মাধ্যমে। শহরবাসীর দাবি, দু’বছর পরে জমজমাট কার্তিক পুজো হতে চলেছে। বাইরে থেকেও বহু মানুষ আসবেন।
মহকুমাশাসক (কাটোয়া) অর্চনা পনধরিনাথ ওয়াংখেড়ে বলেন, ‘‘পুজো সুষ্ঠ ভাবে সম্পন্ন করার জন্য পুলিশ প্রশাসন সব রকমের ব্যবস্থা নিয়েছে।’’