— প্রতীকী চিত্র।
সম্প্রতি কাটোয়া মহকুমার বেশ কয়েকটি ধান্যক্রয় কেন্দ্রে ওজনে ঠকানোর অভিযোগ করেছিলেন কৃষকেরা। বিষয়টি নজরে আসে প্রশাসনের। মঙ্গলবার চালকল মালিকদের নিয়ে বৈঠক করেন কাটোয়ার মহকুমাশাসক অহিনসা জৈন। সেখানে স্পষ্ট জানানো হয়, ধান্যক্রয় কেন্দ্রগুলিতে যেন কোনও ভাবেই সরকারি নিয়ম বর্হিভূত কাজ না করা হয়। চাষিদের ঠিকঠাক ওজন দেখিয়েই ধান কিনতে হবে।
মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি মরসুমে কাটোয়া মহকুমা থেকে ১ লক্ষ ৭৫ হাজার ৬৬৬ মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি মঙ্গলকোটের একাধিক ধান্যক্রয় কেন্দ্র ঘুরে নানা বেনিয়ম দেখতে পান জেলাশাসক আয়েষা রানি এ। কাটোয়াতেও কী কারণে চাষিদের কাছ থেকে খাদ বাদ দেওয়া হচ্ছে, তার কোনও নথি ধান্যক্রয় কেন্দ্রে ছিল না। যে যন্ত্রের সাহায্যে খাদ নির্ধারণ করা হয়, সেই যন্ত্রও ব্যবহার না হওয়ার প্রমাণ মিলেছিল। এরই মধ্যে সোমবার কাটোয়া মহকুমার একটি ব্লকে ধান দেওয়া নিয়ে চালকল মালিকদের সঙ্গে ব্লক প্রশাসনের মনোমালিন্য হয়। এ দিনের বৈঠকে চালকল মালিকেরা দাবি করেন, খাদ্য দফতরের পারচেজ অফিসারেরা বসে থাকেন, আর চালকলের কর্মীদের যাবতীয় কাজ করতে হয়। সেই কারণেই চাষিরা মনে করেন, তাঁরাই খাদ বাদ দিচ্ছেন। সরকারি প্রতিনিধিদের উপস্থিতি, পারচেজ অফিসারের অনুমতি নিয়ে খাদ বাদ দেওয়ার কথা প্রচার করার দাবি করেন তাঁরা। খাদ্য দফতরের দুই অফিসার এ সপ্তাহে মঙ্গলকোটের প্রতিটি ধান্যক্রয় কেন্দ্র পরিদর্শন করে রিপোর্ট দেবেন বলেও জানা গিয়েছে। চাষিদের সঙ্গেও কথা বলবেন তাঁরা। ১০ পারচেজ অফিসারকে বদলি করা হয়েছে বলেও বৈঠক সূত্রে জানা গিয়েছে।
কাটোয়ার কুরচি গ্রামের দীপেন মণ্ডল নামে এক কৃষকের দাবি, “আমরা হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে ধান উৎপাদন করি। কিন্তু ধান বিক্রি করতে গিয়ে আমাদের ওজনে ঠকানো হচ্ছে। প্রতি কুইন্টালে ৫ থেকে ৭ কেজি করে ধান বাদ দেওয়া হচ্ছে।’’ ঘণ্টা দেড়েকের বৈঠকে মহকুমাশাসক জানিয়ে দেন, ওজনে কোনও কারচুপি করা যাবে না। চালকল মালিকদেরও কিছু নির্দেশ দেওয়া হয়। ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট (কাটোয়া) সমিত সরকার বলেন, “ধান কেনা নিয়ে মহকুমাশাসকের উপস্থিতিতে চালকল মালিকদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। ধান্যক্রয় কেন্দ্রে যাতে কৃষকদের কোনও ভাবেই ঠাকানো না হয়, তা দেখতে বলা হয়েছে।’’