ফাইল চিত্র
আগামী ২৯ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হল রানিগঞ্জের ৮৮ ও ৮৯ নম্বর ওয়ার্ডের ‘লকডাউন’, জানিয়েছে পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন। গত শুক্রবার এই দু’টি ওয়ার্ডে এক সপ্তাহের প্রাথমিক লকডাউন-পর্ব শেষ হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, শনিবার দু’টি ওয়ার্ডে যথাক্রমে তিন ও পাঁচ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে এই দু’টি ওয়ার্ডে দ্বিতীয় পর্যায়ের লকডাউন বলে জানিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু প্রথম পর্বে এক সপ্তাহের লকডাউন করে কতটা কী উপকার হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা এবং ডাক্তারদের একাংশ।
প্রথম পর্যায়ে এই দুই ওয়ার্ডে এক সপ্তাহের লকডাউন শুরু হয়েছিল ১৮ জুলাই। সেই সময় পর্যন্ত রানিগঞ্জ পুর ও পঞ্চায়েত এলাকায় ৬২ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে জানিয়েছে আসানসোল পুরসভা। পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) দিব্যেন্দু ভগত জানান, এ পর্যন্ত রানিগঞ্জে আক্রান্তের সংখ্যা ১২৭ জন। তাঁদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৪৮ জন। বিশেষ ভাবে লক্ষ্য করার মতো, ১৫ জুলাই ৮৮ ও ৮৯ নম্বর ওয়ার্ডে সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল এক জন করে। কিন্তু এই মুহূর্তে ৮৮ নম্বর ওয়ার্ডে মোট ৩৭ জন এবং ৮৯ নম্বর ওয়ার্ডে ১৯ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র দু’টি ওয়ার্ডে লকডাউন করে কতটা লাভ হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী নেতারা এবং ডাক্তারদের একাংশ। রানিগঞ্জের সিপিএম বিধায়ক রুনু দত্ত বলেন, ‘‘আমরা শুরুতেই গোটা রানিগঞ্জ পুর-এলাকায় লকডাউনের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু তা করা হয়নি। এখন দেখা যাচ্ছে, দুই ওয়ার্ডে লকডাউন করেও খুব একটা লাভ হয়নি।’’ ‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’-এর পশ্চিম বর্ধমান জেলা কোঅর্ডিনেটর সমরেন্দ্রকুমার বসুও মনে করেন, ‘‘রানিগঞ্জের মতো ছোট ঘিঞ্জি শহরে একটি বিশেষ অংশে লকডাউন করে বিশেষ লাভ হয়নি। কারণ, লকডাউন হওয়া এলাকার বাসিন্দাদের অবাধে অন্যত্র গিয়ে বাজার করে আনার ঘটনা প্রকাশ্যেই ঘটছে। এ ভাবে বিশেষ করে কোনও এলাকায় লকডাউন ঘোষণা করলে প্রশাসনের উচিত কঠোর হাতে তা মোকাবিলা করা। তা না হলে সাত দিন কেন, এক মাস লকডাউন করলেও কিছু হবে না।’’ আসানসোল জেলা হাসপাতালের প্রাক্তন সুপার শ্যামল সান্যাল আবার দ্রুত স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে পদক্ষেপ করার দাবি জানিয়েছেন। তাঁর আর্জি, প্রয়োজনে বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে লালারসের নমুনা সংগ্রহের কাজে যুক্ত করে কোভিড টেস্টের সংখ্যা অনেকটাই বাড়াতে হবে। বাড়াতে হবে কোভিড হাসপাতালের সংখ্যাও। তাঁর কথায়, ‘‘স্বল্পমেয়াদি পদ্ধতিতে এলাকাকে সংক্রমণ মুক্ত করা প্রায় অসম্ভব।’’
যদিও, জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘‘পরিস্থিতির নিরিখেই সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। প্রশাসন নানা ভাবে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে।’’ তবে, বিএমওএইচ (আলুগড়িয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র) মনোজ শর্মা বলেন, ‘‘প্রশাসন আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে। নাগরিকদেরও আরও সচেতন হতে হবে।’’