মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা তৃণমূল নেতৃত্বের। —নিজস্ব চিত্র।
কারখানা লাগোয়া জায়গা থেকে যুবকের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় পরিবারের তরফে সিআইএসএফের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হল। কুলটির সেল গ্রোথ কারখানার এই ঘটনা নিয়ে সিআইএসএফ কর্তৃপক্ষের তরফেও পৃথক বিভাগীয় তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। মঙ্গলবার সকালে ওই যুবকের দেহ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, সাত দিনের মধ্যে মৃতের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ না দেওয়া হলে ফের বিক্ষোভ করা হবে। একই দাবি করেছে বিজেপিও।
সোমবার সকালে কুলটির সেল গ্রোথ ডিভিশনের বন্ধ লাইট কাস্টিং কারখানার বাইরে পাঁচিল লাগোয়া ঝোপে ঘেরা জায়গা থেকে এক যুবকের দেহ উদ্ধার হয়। এই ঘটনা নিয়ে তেতে ওঠে এলাকা। মৃতের পরিবারের তরফে অভিযোগ করা হয়, সিআইএসএফের সদস্যেরা তাঁকে পিটিয়ে খুন করেছেন। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের দাবিতে কারখানার সদর কার্যালয়ের গেটে অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু করেন পরিজনেরা। পরিবারের দাবি সমর্থন করে আসরে নামেন কুলটির বিজেপি বিধায়ক অজয় পোদ্দার। কিছু পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছন তৃণমূল জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী এবং আইএনটিটিইউসি জেলা সভাপতি অভিজিৎ ঘটক। এক সময়ে সিআইএসএফ বাহিনীর সঙ্গে তৃণমূল কর্মীদের ধস্তাধস্তিও বাধে।
কুলটি থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাত ৯টা নাগাদ মৃত বিকি রবিদাসের দাদা রাজেশ রবিদাস লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাতে মৃত্যুর জন্য সিআইএসএফকে দায়ী করা হয়েছে। আট জন সিআইএসএফ জওয়ান তাঁর ভাইকে মারধর করেছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেছেন রাজেশ। পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি (পশ্চিম) সন্দীপ কাড়রা বলেন, ‘‘রাতে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।’’ সিআইএসএফের এক পদস্থ কর্তাও বলেন, ‘‘অভিযোগ আমরা দেখেছি। ঘটনার বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। দোষ পাওয়া গেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকালে ওই যুবকের দেহ আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠানো হলেও, সেখানে ময়না-তদন্ত করানো হয়নি। কারণ, মৃতের
শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এই রকম ক্ষেত্রে ময়না-তদন্ত আসানসোল জেলা হাসপাতালে করানো হয় না। তাই দেহ ময়না-তদন্তের জন্য মঙ্গলবার সকালে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার এলাকায় নতুন করে কোনও অশান্তি হয়নি। তবে কুলটি ব্লক আইএনটিটিইউসি সভাপতি বাবু দত্তের হুঁশিয়ারি, ‘‘সাত দিনের মধ্যে আমাদের দাবি মেনে মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা না হলে ফের আন্দোলন শুরু হবে।’’ একই দাবিতে করেছেন কুলটির বিজেপি বিধায়ক অজয় পোদ্দারও। দোষী সিআইএসএফ কর্মীর শাস্তির দাবিও তুলেছেন তিনি।