স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তখন চিকিৎসাধীন এক খুদে। সোমবার জামুড়িয়ায়। নিজস্ব চিত্র
গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে গিয়েছিলেন জনা দশেক খুদে পড়ুয়া। ঘরে উনুন জ্বলছিল। ছিলেন না শিক্ষক। দরজা বন্ধ করে বসে থাকায় ধোঁয়ায় অচেতন হয়ে পড়ে পড়ুয়ারা, এমনই অভিযোগ উঠল জামুড়িয়া রুইদাসপাড়ায়। ওই গৃহশিক্ষক বাড়ি ফিরে বিষয়টি নজরে পড়ার পরে ওই পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয় ওই পড়ুয়াদের।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রুইদাসপাড়ার বাসিন্দা মুকেশ রুইদাস নিজের বাড়িতে খুদে পড়ুয়াদের টিউশন দেন। এ দিন বাড়িতে উনুন জ্বালিয়ে কোনও কাজে তিনি বাইরে গিয়েছিলেন। প্রাথমিক স্কুলের নানা শ্রেণির দশ জন পড়ুয়া সেই সময়ে তাঁর কাছে পড়তে এসেছিল। তিনি জানান, কিছুক্ষণ পরে ফিরে এসে দরজা খুলতেই দেখেন, দশ জন খুদে অচেতন হয়ে পড়ে রয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘ব্যক্তিগত কাজে মিনিট দশেক বাড়ির বাইরে ছিলাম। ওরা ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে দরজা বন্ধ করে দিতে পারে, তা আমার মাথায় আসেনি।’’ তিনি জানান, খুদে পড়ুয়ারা দরজা বন্ধ করে দেওয়ায় ঘর ধোঁয়ায় ভরে যায়। তাতেই শ্বাসকষ্টের জেরে পড়ুয়ারা অচেতন হয়ে পড়ে বলে তাঁদের অনুমান।
মুকেশবাবু জানান, তিনি পড়ুয়াদের ওই অবস্থায় দেখে আতঙ্কিত হয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি করেন। প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। প্রতিবেশী স্বপন রুইদাস জানান, তাঁরা মোটরবাইকে করে পড়ুয়াদের আখলপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে সাত জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তিন জনকে ভর্তি রেখে ঘণ্টাখানেক অক্সিজেন দেওয়া হয়। সুস্থ হলে তাদেরও ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অভিভাবক উজ্জ্বল রুইদাস, বাবলু রুইদাসেরা বলেন, ‘‘শিক্ষক দেরিতে বাড়ি ফিরলে ছেলেমেয়েদের কী হত, সেটা ভেবেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ছি!’’
এ দিন ঘটনার খবর পেয়ে অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছন আসানসোল পুরসভার এক নম্বর বরো চেয়ারম্যান শেখ শানদার। তিনি বলেন, “এ ভাবে উনুন জ্বালিয়ে দরজা-জানলা বন্ধ করে দিলে মর্মান্তিক পরিণতি হতে পারে। এ বিষয়ে পুরসভার তরফে প্রচার চালানো হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” মুকেশবাবু বলেন, ‘‘আর কোনও দিন উনুন জ্বালিয়ে বাইরে যাব না।