প্রতীকী ছবি।
সামনেই মাধ্যমিক। তার আগে, চলতি মাসে বিয়ে ঠিক করেছিলেন বাড়ির লোকজন। অথচ, পড়তে চায় মেয়ে। শেষে, এক শিক্ষিকার সাহায্যে হোয়্যাটসঅ্যাপে বিডিও-কে চিঠি পাঠিয়ে নিজের বিয়ে আটকাল পূর্ব বর্ধমানের গলসি ২ ব্লকের ওই নাবালিকা। বুধবার রাতে বিডিও (গলসি ২) সঞ্জীব সেন ও জয়েন্ট বিডিও বাপ্পাদিত্য রায় ছাত্রীটির বাবা-মাকে বুঝিয়ে বিয়ে আটকান।
গলসি ২ ব্লকের গোহগ্রাম পঞ্চায়েতের ওই কিশোরীরা তিন বোন, এক ভাই। তার দুই দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বাবা খেতমজুর। সামনের ২৭ অগ্রহায়ণ ওই নাবালিকার বিয়ে ঠিক করেন তার বাবা-মা। কিশোরীর কথায়, ‘‘আমি আরও পড়ে চাকরি করে সংসারে সাচ্ছল্য আনতে চাই। তাই এখনই বিয়েতে রাজি ছিলাম না। কিন্তু বাড়ির লোকেরা কথা শুনছিল না। সামনেই স্কুলের টেস্ট। পড়ায় মন বসাতে পারছিলাম না। এলাকার এক শিক্ষিকা এক নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করেছিলেন। তাই তাঁর কাছে গিয়ে সব জানাই।’’
ওই শিক্ষিকা বলেন, ‘‘সব কথা শুনে বিডিওকে একটি আবেদন লিখতে বলি মেয়েটিকে। চিঠির ছবি তুলে বিডিওকে হোয়্যাটসঅ্যাপ করি। পরে জানতে পারি, প্রশাসনের আধিকারিকেরা বিয়ে বন্ধ করেছেন। শান্তি পেলাম।’’
বিডিও বলেন, ‘‘১৮ বছরের নিচে বিয়ে দিলে মেয়ের ক্ষতি হয়। কম বয়সে বিয়ে দেওয়া বেআইনিও। মেয়েটির বাবা-মাকে তা বুঝিয়েছি। মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা বিয়ে দেবেন না বলে মুচলেকা দিয়েছেন।’’
মেয়েটির মা বলেন, ‘‘ভাল পাত্র পেয়েই বিয়ের আয়োজন করেছিলাম। তবে প্রশাসন ও মেয়ের যখন আপত্তি রয়েছে, তখন কী করা যাবে!” বিয়ে যাঁর সঙ্গে ঠিক হয়েছিল তিনি গলসি ১ ব্লকের খুরাজ গ্রামের চালকল কর্মী। তাঁর দাবি, আমার ঠাকুমা অসুস্থ। তাই তড়িঘড়ি বিয়ে ঠিক হয়েছিল। কিন্তু পাত্রী নাবালিকা জানতাম না। বিডিও-কে জানিয়েছি, এখন বিয়ের প্রশ্ন নেই।’’
বুধবার রাতেই নিজস্ব সূত্রে খবর পেয়ে গলসি ২ ব্লকের আদড়াহাটি পঞ্চায়েতের আরও এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর বিয়ে বন্ধ করে প্রশাসন। বিডিও বলেন, “দুই ছাত্রীই উচ্চশিক্ষার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা পাবে। আর পরিবারগুলো যদি নাবালিকা অবস্থায় মেয়েদের বিয়ে দিতে চেষ্টা করে, আইনি পদক্ষেপ করা হবে।’’