শিক্ষকদের ছবি টাঙানোর নির্দেশ স্কুলকে

জেলার প্রাথমিক ও হাইস্কুল মিলিয়ে ৪,৬৬৮টি স্কুলে নোটিস বোর্ডে শিক্ষকদের ছবি থাকবে।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৯ ০২:০৮
Share:

এমনই ছবি টাঙানো হচ্ছে স্কুলে। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়

ছবি দিয়ে যাবে চেনা! প্রাথমিক ও হাইস্কুলের শিক্ষকদের জন্য সর্বশিক্ষা মিশনের এই নির্দেশই বাধ্যতামূলক করল পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। প্রশাসনের কর্তাদের একাংশের মতে, স্কুলের শিক্ষকদের সম্পর্কে এলাকাবাসী, পড়ুয়া ও অভিভাবকদের যাতে স্বচ্ছ ধারণা হয়, তাই এই পদক্ষেপ।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রের খবর, জেলার প্রাথমিক ও হাইস্কুল মিলিয়ে ৪,৬৬৮টি স্কুলে নোটিস বোর্ডে শিক্ষকদের ছবি থাকবে। হাইস্কুলের ক্ষেত্রে ছবির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক কোন ক্লাসের দায়িত্বে, কী বিষয় পড়াচ্ছেন, তা-ও লেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা আধিকারিক মৌলি সান্যাল বলেন, ‘‘আমরা জেলা জুড়ে বাধ্যতামূলক ভাবে শিক্ষকদের ছবি টাঙানোর নির্দেশ দিয়েছি। এর ফলে শিক্ষকদের মর্যাদাও বাড়বে।’’

ইতিমধ্যে কিছু স্কুলে সেই নির্দেশিকা পালনেরও তোড়জোড় শুরু হয়েছে। কিন্তু তাতেও কিছু বিপত্তি থাকছেই, মনে করছেন অভিভাবকদের একাংশ। তাঁরা জানান, কাটোয়া, মঙ্গলকোট-সহ জেলার নানা প্রান্তের স্কুলে দেখা যাচ্ছে, স্কুলে মনীষীদের ছবির পাশেই নোটিস বোর্ড। আর সেখানেই শোভা পাচ্ছে শিক্ষকদের ছবিও!

Advertisement

তবে এই নির্দেশ ‘বাধ্যতামূলক’ করার কারণ হিসেবে বেশ কিছু কারণ রয়েছে বলে দাবি প্রশাসনের কর্তাদের একাংশের। সর্বশিক্ষা অভিযান দফতরের এক পরিদর্শক জানান, তাঁদের ফর্মে একটি লেখা থাকে, ‘শিক্ষকদের ছবি টাঙানো রয়েছে কি না’। তা ছাড়া অনেক সময়েই দেখা যায়, কোন ক্লাসে কোন শিক্ষক পড়াচ্ছেন সে সম্পর্কে ধারণা থাকে না অভিভাবক ও দফতরের পরিদর্শকদের। এমনকি, পড়ুয়ারাও অনেক সময়ে ঠিক মতো তথ্য দিতে পারে না। তা ছাড়া ক্লাস নিতে বা স্কুলে আসার ক্ষেত্রে কোনও শিক্ষক যদি কোনও অনিয়ম করেন, তা-ও এই পদক্ষেপের ফলে ধরা পড়বে।

কিন্তু এই নির্দেশ ঘিরে নানা মত শিক্ষক মহলে। আরএসপি-র প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক সংগঠনের নেতা স্বপন মালিকের দাবি, এর ফলে পড়ুয়া-অভিভাবক-শিক্ষক সম্পর্কে স্বচ্ছতা থাকবে। এই নির্দেশের মূল উদ্দেশ্য শিক্ষক-অভিভাবক পরিচিতি বাড়ানো, মত দাঁইহাট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মনোহর দাসের। এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি তপন পোড়েলও। তবে হাইস্কুলের শিক্ষকেরা এই সিদ্ধান্ত নিয়ে দ্বিমত। কেন এমন নির্দেশ, তা নিয়ে তাঁরা সন্দিহান বলে জানান তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি তপন রায়। এবিটিএ নেতা সুদীপ্ত গুপ্তের দাবি, ‘‘অন্য জেলায় তো এমন নির্দেশিকা জারি হয়নি। তা হলে এখানে কেন, তা স্কুল পরিদর্শকের কাছে জানতে চাইব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement