প্রতীকী ছবি।
মাস গেলে যথেষ্ট বেতন মেলে না। প্রশাসনের নানা স্তরে দরবার করেও ফল হয়নি। এই অভিযোগে দু’মাস ধরে বেতন নেননি পশ্চিম বর্ধমানের নানা স্কুলের কম্পিউটার শিক্ষকেরা।
স্কুলের কম্পিউটার শিক্ষকদের সংগঠন ‘পশ্চিমবঙ্গ আইসিটি স্কুল প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার প্রায় ১৫০টি স্কুলের প্রতিটিতেই কম্পিউটার শিক্ষক রয়েছেন। ২০১৩ সাল থেকে একটি বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে তাঁরা স্কুলে কাজ করে চলেছেন। তিন-চার দফায় পাঁচ বছরের চুক্তিতে কম্পিউটার শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। প্রথম দফায় নেওয়া শিক্ষকদের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরে ২০১৮ সালে চুক্তির পুনর্নবীকরণ করা হয়।
ওই শিক্ষকেরা জানান, মাস গেলে তাঁদের বেতন, ৪,৯০০ টাকা করে। শিক্ষকদের ওই সংগঠনের দাবি, কম্পিউটার শিক্ষা দেওয়ার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি সংস্থাটি স্কুল পিছু রাজ্য সরকারের কাছ থেকে বছরে ৩ লক্ষ ৪৯ হাজার ৩৬৫ টাকা করে পায়। কিন্তু শিক্ষকদের বেতনের এই হাল। এর প্রতিবাদেই মে ও জুনে তাঁরা বেতন নেননি বলে জানান শিক্ষকেরা। বিষয়টি জানিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও তাঁরা চিঠি দিয়েছেন বলে জানান ওই সংগঠনের সদস্যেরা। সংগঠনের সম্পাদক সনাতন আঁকুড়ে বলেন, ‘‘জেলা স্কুল পরিদর্শকের সঙ্গে দেখা করে আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু কোনও ফল হয়নি। এত সামান্য অর্থে কী ভাবে কারও দিন চলে? রাজ্য জুড়ে কম্পিউটার শিক্ষকদের এই হাল।’’
এই পরিস্থিতিতে পঠন-পাঠনে শিক্ষকেরা কতটা মন দিতে পারছেন, তা নিয়ে সন্দিহান অভিভাবকদের একাংশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তেমনই কয়েক জন অভিভাবকের কথায়, ‘‘এমনিতেই বেতন এত অল্প। তার পরে দু’মাস বেতন নেননি কম্পিউটার শিক্ষকেরা। এর পরে কি ভাবে তাঁরা নিশ্চিন্ত মনে কম্পিউটার শেখাবেন? ফল ভুগবে পড়ুয়ারা।’’
জেলা স্কুল পরিদর্শক অজয় পাল অবশ্য বলেন, ‘‘বিষয়টি রাজ্য স্তরের। জেলা থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। কম্পিউটার শিক্ষকদের দাবি রাজ্য স্তরে সংশ্লিষ্ট দফতরে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’