প্রতীকী ছবি।
বালি ‘পাচার’-এর কারবার রুখতে গত ১৫ দিন ধরে লাগাতার অভিযান চালাচ্ছে পশ্চিম বর্ধমান জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। এ জন্য জেলা ও দুই মহকুমা আসানসোল ও দুর্গাপুরে তিনটি পৃথক ‘টাস্ক ফোর্স’ গঠন করা হয়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, সেপ্টেম্বর মাস থেকে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে অভিযান চালিয়ে এখনও পর্যন্ত ‘অবৈধ’ বালি বোঝাই ৪৩টি ট্রাক ও শতাধিক ট্রাক্টর আটক করা হয়েছে। প্রায় ৩৮৭ জনের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। জরিমানা আদায় করা হয়েছে প্রায় এক কোটি টাকা।
‘অবৈধ’ বালির কারবার প্রসঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করে সম্প্রতি ‘নবান্ন’-এর তরফে জেলা প্রশাসনগুলিকে কড়া বার্তা পাঠানো হয়েছে। করোনা অতিমারির সময়েও ভার্চুয়াল বার্তায় জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের ‘অবৈধ’ বালির কারবার বন্ধ করতে কড়া হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। সে কারণে ‘টাস্ক ফোর্স’ গঠন করে ধারাবহিক অভিযানের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। এই প্রসঙ্গে অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) খুরশিদ আলি কাদরি বলেন, ‘‘জেলা ও মহকুমা স্তরে তিনটি পৃথক টাস্কফোর্স গঠন করে অভিযান চালাচ্ছি। এখনও পর্যন্ত প্রায় চারশো জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এক কোটি টাকা জরিমানা আদায় হয়েছে।’’ তিনি জানান, অজয় ও দামোদর নদের পাড়ে ৪৭টি বৈধ বালি খাদান রয়েছে। এর মধ্যে ২৪টি থেকে এখন বালি তোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ২৩টি বালি খাদান থেকে বালি তোলার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি ভূমি দফতরের জেলা কার্যলয়ে অজয় ও দামোদরের পাড়ের বেশ কয়েকটি অবৈধ বালি খাদান চালানোর অভিযোগ জমা পড়ে। গত সোমবার টাস্ক ফোর্সের সদস্যেরা অভিযানে নামেন। বারাবনি থেকে আসানসোলের দিকে যাওয়া পরপর ১৭টি বালি বোঝাই ট্রাক ধরা হয়। প্রায় ১,২৫০ ঘনমিটার বালি বাজেয়াপ্ত করা হয়। বালিবোঝাই এই ট্রাকগুলি বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশের দিকে যাওয়ার কথা ছিল বলে আধিকারিকেরা জেনেছেন। এই প্রসঙ্গে অতিরিক্ত জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি জানিয়েছেন, গত ৬ জুলাই থেকে বর্ষার জন্য নদী থেকে বালি তোলার অনুমতি বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু এক দল দুষ্কৃতী বেআইনি ভাবে বালি তুলছে। এই কারবার বন্ধ করতে কাঁকসা, রানিগঞ্জ, অণ্ডল, বারাবনি, ডিসেরগড়, বার্নপুর এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে বিশেষ টাস্ক ফোর্স।
জেলা প্রশাসনের দাবি, গত বছরেও এই সময় টাস্ক ফোর্স গঠন করে অভিযান চালানো হয়েছে। গত অর্থবর্ষে বালি থেকেই জেলার রাজস্ব আদায় হয়েছিল প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা। খুরশিদ আলি কাদরি জানিয়েছেন, চলতি অর্থ বছরে আরও বেশি রাজস্ব আদায়ের চেষ্টা চলছে। বালির অবৈধ কারবার বন্ধ করতে সিসি ক্যামেরা বসানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।