তাঁতের কাজ চলছে কালনায়। নিজস্ব চিত্র।
সপ্তাহখানেক ধরে চলেছে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া। ফলে, পুজোর মুখে সমস্যায় পড়েছেন কালনা মহকুমার হস্তচালিত তাঁতের কারিগরেরা। তাঁদের দাবি, তাঁতঘরে এখনও জল না ঢুকলেও, ভারী আবহাওয়ার কারণে হস্তচালিত তাঁতযন্ত্রে শাড়ি বোনা কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকেই কাজ বন্ধ করে রোদ ওঠার দিকে তাকিয়ে রয়েছেন।
কালনা মহকুমায় এক সময়ে তাঁতির সংখ্যা ছিল ৪০ হাজারেরও বেশি। হস্তচালিত তাঁত দফতরের হিসাবে, তাঁতিদের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় এক-তৃতীয়াংশে। ব্যবসায়ীদের দাবি, ভিন্ রাজ্যের পাওয়ারলুমের শাড়ির নকশা ও দামের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেননি এলাকার শিল্পীরা। মজুরি কমে আসায় অন্য পেশায় চলে গিয়েছেন বহু শিল্পী। ফলে, বহু তাঁতঘরে ধুলো জমছে।
তবে এখনও কালনা মহকুমার সমুদ্রগড়, ধাত্রীগ্রাম, শ্রীরামপুর-সহ বিভিন্ন এলাকায় যারা তাঁতের শাড়ি বোনেন, তাঁরা টানা বৃষ্টির কারণে চরম সমস্যায় পড়ছেন। তাঁতশিল্পী অমর দাস জানান, মেঘলা আবহাওয়া চলতে থাকার কারণে তাঁতযন্ত্র ভারী হয়ে গিয়েছে। যন্ত্র থেকে দ্রুত সুতো নামতে চায় না। বার বার সুতো আটকে যাওয়ায় অনেক সময় লাগছে শাড়ি বুনতে। রোদ না মেলায় শাড়ি শুকোতেও সমস্যা হচ্ছে। এ ছাড়া, দুর্যোগে শাড়ি হাটে নিয়ে যেতেও সমস্যা হচ্ছে বলে জানান তিনি। আর এক তাঁতশিল্পী তপন বসাকের কথায়, ‘‘একটা তাঁতের শাড়ির মজুরির দরে এখন সুরাতের শাড়ি পাওয়া যায়। তবু পুজোয় কিছুটা বিক্রি হবে, এই আশায় শাড়ি বুনছিলাম। টানা দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া চলতে থাকায় শাড়ি বোনার কাজ সে ভাবে করা যাচ্ছে না।’’ তাঁতিদের দাবি, তাঁতঘরে জল ঢুকে পড়লে একেবারে বন্ধ রেখে দিতে হবে তাঁত। যদিও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।
মহকুমা হস্তশিল্প আধিকারিক রঞ্জিত মাইতি বলেন, ‘‘বর্তমান আবহাওয়া হস্তচালিত তাঁতের শাড়ি বোনার পক্ষে অনুকূল নয়। ঝলমলে রোদ না উঠলে পুরোপুরি ছন্দে শাড়ি বুনতে পারবেন না তাঁতিরা। পরিস্থিতি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।’’