পরিবহণ মালিকদের দাবি, শ্রমিকেরা ঠিকমতো কাজ না করায় ক্ষতি হচ্ছে। উল্টো দিকে, শ্রমিকদের অভিযোগ, তাঁদের মজুরি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই দু’পক্ষের চাপানউতোরে সিলিন্ডার তোলা-নামানো নিয়ে ফের সমস্যা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ইন্ডিয়ান অয়েলের (আইওসিএল) দুর্গাপুর বটলিং প্ল্যান্টে। বৃহস্পতিবার বৈঠক করেও রফাসূত্র মেলেনি বলে প্রশাসনের দাবি।
প্ল্যান্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, দরপত্রের মাধ্যমে ২৮ জন পরিবহণকারীর মোট ২২৯টি ট্রাক চলে। সিলিন্ডার তোলা-নামামোর কাজে যুক্ত একশোরও বেশি ঠিকা শ্রমিক। একটি ট্রাকে ৩০৬টি সিলিন্ডার থাকে। পরিবহণকারীদের দাবি, গড়ে দিনে ১৮০ ট্রাক সিলিন্ডার বোঝাই করতে হবে।
পরিবহণ মালিকদের অভিযোগ, শ্রমিকদের একাংশের অসহযোগিতায় সেই লক্ষ্যপূরণ হচ্ছে না। সে জন্য আইওসিএল কর্তৃপক্ষ তাঁদের আর্থিক জরিমানা করেছেন। আইওসিএল-এর জেনারেল ম্যানেজার (এলপিজি অপারেশন) উজ্জ্বলপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘এই প্ল্যান্ট থেকে দক্ষিণবঙ্গের সাতটি জেলায় সিলিন্ডার সরবরাহ করা হয়। চাহিদা অনুযায়ী সিলিন্ডার সরবরাহ করতে না পারায় পরিবহণকারীদের প্রায় ২৬ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’’ পরিবহণকারীদের তরফে সংগ্রাম নায়েক বলেন, ‘‘এক দিকে শ্রমিকরা ঠিক মতো কাজ করছেন না। অন্য দিকে কর্তৃপক্ষ জরিমানা করছেন। বাধ্য হয়ে বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েছি।’’
শ্রমিকদের যদিও পাল্টা অভিযোগ, ট্রাক পিছু মজুরি কমানো হয়েছে। তাই গত তিন মাস তাঁরা বেতন নিচ্ছেন না। পরিবহণকারীদের অবশ্য দাবি, নতুন যান্ত্রিক ব্যবস্থায় শ্রমিকেরা দিনে আগের থেকে বেশি সংখ্যক ট্রাক বোঝাই করতে পারবেন। ফলে ট্রাক পিছু মজুরি কমলেও সার্বিক রোজগার বাড়বে। শ্রমিকরা তা মানতে রাজি নন বলে মালিকদের দাবি।
দু’পক্ষের মতান্তরে চলতি বছরের জুন মাসে সপ্তাহখানেক প্ল্যান্ট বন্ধ ছিল। এর ফলে দক্ষিণবঙ্গের নানা জেলায় গ্যাস-সঙ্কট দেখা দেয়। সমস্যা মেটার পরে দিন কয়েক শ্রমিকরা দৈনিক চাহিদার থেকে বেশি ট্রাক বোঝাই করে পরিস্থিতি সামাল দেন। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যে ফের শ্রমিকদের একাংশ অসহযোগিতা শুরু করেন বলে পরিবহণকারীদের অভিযোগ। দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে পরিবহণ বন্ধ করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন পরিবহণ মালিকেরা।
বৃহস্পতিবার কোকআভেন থানায় প্রশাসন দু’পক্ষের সঙ্গে আলাদা আলাদা ভাবে বৈঠক করে। রফাসূত্র না মিললেও প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, জুন মাসের মতো পরিস্থিতি ফের যাতে না হয়, তা দেখা হবে।