আসানসোল পুরসভায় কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা। নিজস্ব চিত্র।
ইঞ্জেকশন-কাণ্ডে অভিযুক্ত তবস্সুম আরার কাছ থেকে সোমবার রাত পর্যন্ত কারণ দর্শানোর নোটিসের উত্তর মেলেনি বলে দাবি আসানসোল পুর-কর্তৃপক্ষের। জবাব না পেলে, তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুর-প্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘ব্যাপারটা নিয়ে এখন রাজ্যের আধিকারিক পর্যায়েও তদন্ত হচ্ছে।’’ যদিও তিনি এমন কোনও চিঠি পাননি বলে দাবি করেছেন তবস্সুম।
শনিবার পশ্চিম বর্ধমানের কুলটির চবকা যৌনপল্লিতে প্রতিষেধক শিবিরের আয়োজন করে পুরসভা। অভিযোগ ওঠে, এক্তিয়ার বহির্ভূত ভাবে সেখানেই এক মহিলাকে নিজেই প্রতিষেধকের ইঞ্জেকশন দেন পুর-বোর্ডের সদস্য তথা প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র তবস্সুম আরা। সোমবারও ওই মহিলার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন পুরসভার স্বাস্থকর্মীরা। পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি, তিনি এখন পুরোপুরি সুস্থই আছেন। ওই মহিলা নিজেও সুস্থতার কথা জানিয়েছেন।
এ দিকে, তবস্সুমের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার দাবিতে জোড়া বিক্ষোভ হয়েছে। সোমবার বেলা ১১টা থেকে কুলটিতে বরো কার্যালয়ে ডিওয়াইএফ-এর কয়েকশো সদস্য-সমর্থক অবস্থান-বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। তাঁদের দাবি, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। কর্মসূচির নেতৃত্বে থাকা সংগঠনের রাজ্য সভানেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুর-কর্তৃপক্ষ শুধুমাত্র একটি কারণ দর্শানোর নোটিস ধরিয়ে নিজেদের দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলতে পারেন না। এটা সাধারণ মানুষের জীবনের বিষয়।’’ তাঁর দাবি, ‘‘শনিবারের কর্মসূচির দায়িত্বপ্রাপ্ত পুরসভার স্বাস্থ্য-কর্তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।’’ একই দাবিতে আসানসোল পুরভবনে বিক্ষোভ দেখিয়েছে ‘আসানসোল সাউথ ব্লক’ কংগ্রেস কমিটি। সংগঠনের সভাপতি শাহ আলম বলেন, ‘‘আমরা বোর্ড সদস্যের পদ থেকে দ্রুত তবস্সুমের অপসারণ দাবি করেছি।’’
পুর-প্রশাসক অমরনাথবাবু দাবি করেন, বিষয়টি নজরে আসা মাত্রই শনিবার তবস্সুমকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তিনি সেই উত্তর দেননি। সোমবার তবস্সুম অবশ্য দাবি করেন, ‘‘এমন কোনও চিঠি আমি পাইনি।’’ যদিও অমরনাথবাবু বলেন, ‘‘পুর-কার্যালয়ের মেমো নম্বরেই উল্লেখ রয়েছে, তিনি চিঠি পেয়েছেন। কারণ দর্শানোর নোটিসের জবাব না পেলে, তাঁকে ফের চিঠি দেওয়া হবে।’’
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবারের ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরসভার দুই স্বাস্থ্যকর্মী ও এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধেও কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ তুলে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছিল। তাঁদেরও সোমবার বিকেল ৫টার মধ্যে উত্তর জমা করার কথা ছিল। তাঁরা জবাব দিয়েছেন কিনা, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানাননি পুরসভার স্বাস্থ্য আধিকারিক দীপক গঙ্গোপাধ্যায়। তবে তিনি বলেন, ‘‘গোটা বিষয়টি এখন তদন্তের পর্যায়ে রয়েছে। গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।’’