—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
প্রথম দিনেই মুখ থুবড়ে পড়ল বাংলা আবাস যোজনা বা বিএওয়াই-এর সমীক্ষা।
সোমবার থেকে আবাস যোজনার প্রাথমিক তালিকায় নাম থাকা ব্যক্তিদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে সরকারি নির্দেশিকা মেনে যাচাই করার কথা ছিল। পরিদর্শকেরা সেই মতো পূর্ব বর্ধমানের বিভিন্ন ব্লকে কাজ শুরু করেন। কিন্তু দিনভর নির্দিষ্ট মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনে দ্রাঘিমাংশ-অক্ষাংশ সমেত তথ্য লিপিবদ্ধ করা যায়নি। সন্ধ্যার দিকে খণ্ডঘোষ-সহ কয়েকটি ব্লকে কিছু বাড়িতে সমীক্ষা করা যায়। পরিদর্শকেরা বাড়ি বাড়ি যাচাই করছেন তার ভিডিয়ো ও ছবি তুলে রাখারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জেলার এক কর্তা বলেন, “দিনভর পোর্টাল খোলেনি। ফলে সমীক্ষার কাজ সে ভাবে শুরু হয়নি। ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সমীক্ষা করা যাবে। আশা করছি, বুধবার থেকে পোর্টালে তথ্য লিপিবদ্ধ করা সম্ভব হবে।”
রাজ্যের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০ ডিসেম্বর থেকে বাংলা আবাস যোজনার প্রাপকদের প্রথম কিস্তির টাকা ছাড়া হবে। কেন্দ্রের আর্থিক সহায়তায় নয়, রাজ্য সরকার বাড়ি তৈরির জন্য প্রাপকদের তিনটে কিস্তিতে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেবে। এক-একটি জেলায় গড়ে ৫০-৬০ হাজার প্রাপককে ওই অনুদান দেওয়া হবে।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, পূর্ব বর্ধমানে ১,৮৯,৯১৬ জনকে ওই সমীক্ষার আওতায় আনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা-গ্রামীণ (পিএমএওইয়া-জি) প্রকল্পের অনুমোদিত তালিকায় পূর্ব বর্ধমানের ৫৫,৬০৯ জনের নাম ছিল। সেই বাড়িগুলির সঙ্গে ওই প্রকল্পে নথিভুক্ত আরও ৭৩,৫৫৩টি বাড়ি যাচাই করবেন পরিদর্শকেরা। এ ছাড়াও মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় (সিএমআরও), সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে (এসএসএম) বাড়ি চেয়ে আবেদন করা ১৬,৬৭৩ জনের বাড়ির সঙ্গে সাম্প্রতিক অতিবৃষ্টি ও নদীর জল ঢুকে ক্ষতি হওয়া ৩২৪টি বাড়িও যাচাই করা হবে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অনুমোদিত তালিকায় গলসি ২ ব্লকের এক জন, পূর্বস্থলী ২ ব্লকের দু’জন, কাটোয়া ২ ব্লকে মাত্র ১৩০ জনের নাম রয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই সমীক্ষার পরেও ১৪ নভেম্বরের মধ্যে আর একবার যাচাই হবে। সেখানে ব্লকস্তরের আধিকারিকেরা ১৫%, মহকুমাস্তরের আধিকারিকেরা ৫% ও জেলাশাসক দফতরের কর্তারা ২% বাড়ি যাচাই করে রিপোর্ট দেবেন। যোগ্যদের প্রাথমিক তালিকা তৈরির পরে জেলা প্রশাসনের সর্বস্তরের ওয়েবসাইটে তা ২১ থেকে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত রাখতে হবে। ওই তালিকা গ্রামসভায় ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে অনুমোদন করার পরে ব্লক কমিটি, জেলা কমিটিতেও অনুমোদন করাতে হবে। ব্লক থেকে জেলা পর্যন্ত কন্ট্রোল রুম খুলতে হবে। ব্লকস্তরে অভিযোগ-বাক্সও রাখতে হবে।
প্রথম পরিদর্শক দলে সরকারি অফিসার, আশাকর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, পুলিশ থাকবে। পরিদর্শকদের নজরদারির জন্য প্রতিটি ব্লকে একজন করে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। রাজ্য থেকে একাধিক দল জেলায় সরেজমিন পরিদর্শনে আসতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের দাবি, সমীক্ষার জন্য পূর্ব বর্ধমান ভাল প্রস্তুতি নিয়েছে। পুজোর ছুটির মধ্যেও প্রতিটি ব্লকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জেলা পরিষদের আধিকারিকেরা।
তবে এ দিন সমীক্ষার জন্য কয়েকটি বাড়ি গিয়ে ব্লকের পরিদর্শকরা দেখেন, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন খুলছেই না। খুললেও ‘ওটিপি’ (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) আসছে না। একদম সন্ধ্যার দিকে খণ্ডঘোষে দু’টি বাড়িতে সমীক্ষা করতে পেরেছেন পরিদর্শকরা।