ফাইল চিত্র।
‘জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০’, এ বিষয়ে রাজ্য প্রথম থেকেই আপত্তি জানিয়েছিল। পাশাপাশি, সম্প্রতি এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে তামিলনাড়ুও। তবে মঙ্গলবার দুর্গাপুরে এসে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার নিশানা করলেন পশ্চিমবঙ্গকেই। তাঁর অভিযোগ, দেশের সমস্ত রাজ্য, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে একমাত্র পশ্চিমবঙ্গ জাতীয় শিক্ষানীতি রূপায়ণের বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করেনি।
সুভাষ ফুলঝোড়ের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ‘আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু সেন্ট্রাল কম্পিউটিং সেন্টার’-এর উদ্বোধন করতে এসেছিলেন। সেখানে তিনি কেন্দ্রের নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি (এনইপি ২০২০) বিষয়ে বক্তব্য রাখেন। পরে, সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সুভাষ বলেন, “এই শিক্ষানীতি অত্যন্ত সময়োপযোগী পদক্ষেপ দেশের মোট ৩৫টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এই শিক্ষানীতি রূপায়ণের বিষয়ে প্রয়োজনীয় কাজকর্ম শুরু হলেও, পশ্চিমবঙ্গে তা হয়নি। এমনকি, কেন্দ্র থেকে পাঠানো ১৬টি অ্যাডভাইসারি’র কোনও জবাবও দেয়নি রাজ্য।” তাঁর দাবি, জাতীয় শিক্ষানীতি রূপায়ণের জন্য কেন্দ্রীয় শিক্ষা দফতরের আধিকারিকেরা অতিমারি সত্ত্বেও অফিসে আসা বন্ধ করেননি। বিভিন্ন পোর্টাল তৈরি করেছেন। এর সুফল সারা দেশের সব রাজ্য পাবে।
ঘটনাচক্রে, জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। এই নীতি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী, এমন অভিযোগ করে ২০২০ থেকে সরব রাজ্য। এই শিক্ষানীতি খতিয়ে দেখতে রাজ্য কমিটি গঠনের কথাও জানিয়েছিল। সম্প্রতি তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের রাজ্যে এই নীতি রূপায়িত হবে না। বিষয়টি নিয়ে তোপ দেগেছে তৃণমূলও। তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন বলেন, “এই শিক্ষানীতি সংসদে আলোচনা হয়নি। অথচ, আরএসএস-এর কাছে তা পেশ করা হয়েছে। রাজ্যের মতামতকে একেবারেই গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। আমাদের রাজ্য সরকার সেটাই বলতে চেয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর অভিযোগ তাই অমূলক।”
এ দিকে, রাজ্য সরকারের ১৬ নভেম্বর থেকে স্কুল খোলা প্রসঙ্গে সুভাষ সরকার বলেন, “আমি বলব, একটু অপরিকল্পিত ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। সমস্ত শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর ১০০ শতাংশ টিকাকরণ সম্পন্ন হয়েছে কি না, সে রিপোর্ট সরকারের কাছে নেই। সে রিপোর্ট থাকা উচিত ছিল।” পাশাপাশি, স্বাস্থ্যবিধি মেনে, এক দিন অন্তর স্কুল করে, প্রতি সপ্তাহে বা দু’সপ্তাহে এক বার করে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়মিত পরীক্ষা করার কথাও বলেন তিনি। যদিও তৃণমূল বিধায়ক প্রদীপ মজুমদারের বক্তব্য, “রাজ্য অত্যন্ত পরিকল্পনা করেই স্কুল, কলেজ খুলছে। এ বিষয়ে কেন্দ্রের মতামতের
দরকার নেই।”