—ফাইল চিত্র।
একের পর এক সেমেস্টারের পরীক্ষা হয়েছে। কিন্তু মার্কশিট হাতে মেলেনি। আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ ২৬টি কলেজের কয়েক হাজার পড়ুয়া এর ফলে বিপাকে পড়ছেন বলে অভিযোগ। ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে অসন্তুষ্ট নানা কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে অভিভাবকেরাও। সময়ে মার্কশিট দেওয়ার দাবিতে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভও হয়েছে। পড়ুয়াদের অভিযোগ, মার্কশিট না পাওয়ায় তাঁরা সরকারি আর্থিক অনুদানের জন্য আবেদনও করতে পারছেন না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবশ্য আশ্বাস, দ্রুত মার্কশিট দেওয়ার ব্যবস্থা হবে।
২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের কলেজ পড়ুয়াদের অভিযোগ, তাঁদের তৃতীয় বর্ষের পঠনপাঠন শুরু হয়েছে। কিন্তু গত দু’বছরের চারটি সেমেস্টারের পরীক্ষার মার্কশিট এখনও মেলেনি। ফলে, আগের সেমেস্টারগুলির ফলাফলের ব্যাপারে কার্যত অন্ধকারে থেকেই পরবর্তী পরীক্ষায় বসতে হচ্ছে বলে তাঁদের অভিযোগ। এর কারণে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও তাঁরা বিপদে পড়ার আশঙ্কা করছেন।
পড়ুয়ারা জানান, সরকারি আর্থিক অনুদান পাওয়ার জন্য ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আবেদন জমা করতে হত। কিন্তু মার্কশিটের অভাবে তা করতে না পারায় সম্প্রতি বিভিন্ন কলেজে বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়ারা। অবিলম্বে মার্কশিট দেওয়ার দাবিতে দল বেঁধে বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজির হয়েও বিক্ষোভ দেখিয়েছেন কিছু ছাত্রছাত্রী। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর স্তরের ছাত্রছাত্রীরা অভিযোগ করেন, রাজ্যের অন্য সব কলেজে স্নাতকোত্তরের পঠনপাঠন শুরু হলেও কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে তা হয়নি। ফলে, তাঁরাও রাজ্য সরকারের আর্থিক অনুদানের জন্য আবেদন করতে পারছেন না।
এই পরিস্থিতির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছে ছাত্র সংগঠনগুলি। বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক আদর্শ শর্মার বক্তব্য, ‘‘আমরাও এ নিয়ে খুব ক্ষুব্ধ। পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছি। শীঘ্রই পদক্ষেপ না করা হলে আন্দোলন শুরু হবে।’’ এসএফআইয়ের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদক মৈনাক চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, তাঁরা যখনই ঠিক সময়ে ফল বার করার দাবি জানিয়েছেন, প্রতি বারই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনও না কোনও ‘অজুহাত’ দিয়েছে। মৈনাকের বক্তব্য, ‘‘দু’সপ্তাহের মধ্যে সমস্যা না মিটলে জেলা জুড়ে আন্দোলন শুরু হবে।’’ মার্কশিট না পেয়ে ছাত্রছাত্রীরা সমস্যায় পড়ছেন, সে কথা মেনে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কন্ট্রোলার সোমনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘ষান্মাসিক ছাত্রদের ফল বার করে দেওয়া হয়েছে। সাধারণ পড়ুয়াদেরও দ্রুত ফল বার করা হবে।’’ মার্কশিট হাতে না পেয়ে সরকারি অনুদানের জন্য পড়ুয়ারা আবেদন করতে না পারার অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর আশ্বাস, ওই আবেদনের সময়সীমা বাড়ানোর বিষয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।