এই রাস্তায় নির্মাণ তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ। —নিজস্ব চিত্র।
প্রায় ১৮ বছর আগে তৈরি হয়েছে সালানপুরের রামডি প্রাথমিক স্কুল। কিন্তু সে সময় যাতায়াতের রাস্তা তৈরি হয়নি। পড়ুয়া ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা এত দিন একটি ফাঁকা জমি দিয়ে যাতায়াত করছিলেন। সম্প্রতি জমির মালিক সেখানে নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন বলে অভিযোগ। এর জেরে বিপাকে পড়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে ও পড়ুয়ারা। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছে জেলা শিক্ষা দফতর।
চিত্তরঞ্জন শিক্ষাচক্রের এই স্কুলটি রয়েছে দেন্দুয়া লাগোয়া সালানপুরের রামডি গ্রামে। স্থানীয় এক ব্যক্তি স্কুল তৈরির জন্য জমি দান করেছিলেন। প্রধান শিক্ষিকা সুধা কুমারী জানান, ২০০৫-এ রাজ্য সরকার ভবন তৈরি করে দেওয়ার পরে স্কুলটি চালু হয়। রামডি গ্রাম, রামডি কলোনি, বনজেমাহারি কোলিয়ারি ও দেন্দুয়া এলাকার ছেলেমেয়েরা সেখানে পড়তে যায়। স্কুল সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ৬১ জন পড়ুয়া আছে। প্রধান শিক্ষিকা-সহ তিন শিক্ষক আছেন। প্রধান শিক্ষিকা সুধা কুমারী বলেন, “যে জমির উপর দিয়ে আমরা যাতায়াত করি, সেই জমিতে পাঁচিল তোলার কাজ শুরু হয়েছে। ফলে, স্কুলে যাওয়া-আসার সমস্যা তৈরি হয়েছে। এই সমস্যা না মেটালে, স্কুলটিবন্ধ হয়ে যাবে।”
সম্প্রতি এলাকায় দেখা গিয়েছে, আসানসোল-চিত্তরঞ্জন মূল সড়ক থেকে প্রায় ১০০ মিটার দূরে ফাঁকা মাঠে রয়েছে স্কুলটি। যাতায়াতের পথে নির্মাণের জন্য গর্ত তৈরি করা হয়েছে। সেই গর্ত ডিঙিয়ে পড়ুয়া ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা যাতায়াত করেছন। রাস্তার দাবিতে সম্প্রতি অবরোধ হয়েছিল। তৃতীয় শ্রেণির পিঙ্কি কুমারী, অভিজিৎ মাহাতোরা বলে, “গর্ত ডিঙিয়ে যাতায়াত করতে ভয় লাগে।” এক অভিভাবক সীমা দেবী বলেন, “রাস্তা না থাকলে ছেলেকে স্কুলে পাঠিয়ে নিশ্চিন্তে থাকতে পারব না। দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হোক।” প্রধান শিক্ষিকার দাবি, স্কুলে যাতায়াতের জন্য কিছুটা রাস্তা ছেড়ে দিতে ওই জমির মালিককে আবেদন করা হলেও, কোনও লাভ হয়নি। রামডি গ্রামের ডাঙালপাড়ার বাসিন্দাজমির মালিক সীতারাম মাহাতোর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে তাঁর স্ত্রী অঞ্জনা মাহাতো বলেন, “ওই জমি আমাদের পৈতৃক সম্পত্তি। বিনামূল্যে জমি ছাড়া হবে না।”
তবে, এত দিনে স্কুলে যাওয়ার স্থায়ী রাস্তা তৈরি করা হয়নি কেন? চিত্তরঞ্জন শিক্ষাচক্রের স্কুল পরিদর্শক পাপিয়া মুখোপাধ্যায় বলেন, “কেন এমন হল খোঁজখবর করছি।” জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) দেবব্রত পালের দাবি, “স্কুলে যাতায়াতের রাস্তা থাকবে না, এটা অবাস্তব। আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে সমাধান করা হবে।”
তবে, জেলা শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক জানান, স্কুল যখন তৈরি হয়েছিল, তখন অবিভক্ত বর্ধমান জেলা ছিল। ফলে, জমি কী শর্তে নেওয়া হয়েছিল, যাতায়াতের পথ কী ভাবে বেরোবে, সে সবের নথি থাকা উচিত। কিন্তু সেগুলি সম্ভবত পূর্ব বর্ধমানে থাকতে পারে। সেই নথি খুঁজে পাওয়া শক্ত।