কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়। নিজস্ব চিত্র
দেরিতে পরীক্ষা ও ফল প্রকাশে দেরির অভিযোগে বারবারই সরব হচ্ছেন আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। সমস্যা দূর করতে পরিকাঠামো উন্নত করা প্রয়োজন, মনে করছেন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান, পরিস্থিতি নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে। দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত প্রায় এক বছরে মাঝে-মধ্যেই দেরিতে ফল প্রকাশের অভিযোগে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন পড়ুয়ারা। তাতে রাশ টানার জন্য কলেজের অধ্যক্ষদের কাছে আবেদন জানানো হবে বলে সম্প্রতি জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার চৈতালি দত্ত। তার পরেও অবশ্য বিক্ষোভে লাগাম পরানো যায়নি। বুধবার শ’পাঁচেক পড়ুয়া মার্কশিট চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বিক্ষোভ দেখান। এর পরে নানা কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও সরব হন।
কলেজ শিক্ষক চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘সময়ে স্নাতক পরীক্ষার মার্কশিট হাতে না পেলে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হতে পড়ুয়ারা সমস্যায় পড়েন। তাই বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নজরে রাখা উচিত।’’ শিক্ষকদের একাংশের মতে, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে যে বিষয়ে স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রম নেই, সেগুলির পড়ুয়াদের সমস্যা বেশি। কারণ, ওই বিষয়ের পড়ুয়াদের স্নাতকোত্তরের জন্য অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতেই হবে। তাই তাঁরা সময়ে মার্কশিট না পেলে ভর্তি হতে পারবেন না।
শিক্ষকদের একাংশের দাবি, সেমেস্টার ব্যবস্থায় পাঠ্যক্রমের নিয়ম হল, একটি সেমেস্টারের ফল প্রকাশের পরেই অন্য সেমেস্টারের পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু এখানে আগের সেমেস্টারের ফল প্রকাশ না করেই পরবর্তী সেমেস্টারের পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। দেখা গিয়েছে, স্নাতক তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়াদের পঞ্চম সেমেস্টারের ফল এখনও বেরোয়নি। অথচ, ষষ্ঠ সেমেস্টারের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। আবার, ষষ্ঠ সেমেস্টারের পরীক্ষাও অনেক দেরিতে নেওয়া হয়েছে। ফলে, তার ফলাফলও দেরিতে প্রকাশ হবে। এর জেরে পড়ুয়ারা অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমান শিক্ষাবর্ষে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হতে সমস্যায় পড়ছেন।
আরও অভিযোগ, স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রমেও চতুর্থ সেমেস্টারের পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। অথচ, দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেমেস্টারের ফল এখনও বেরোয়নি। শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, অনলাইনে খাতা দেখার ক্ষেত্রেও অনেক ত্রুটি রয়েছে। পড়ুয়াদের গড় নম্বর দেওয়া হচ্ছে। এই সমস্যাগুলি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা তথা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আদর্শ শর্মা। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর কাছে বিশদে অভিযোগ জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাধন চক্রবর্তীর অবশ্য আশ্বাস, এ বিষয়ে আলোচনা চলছে। তিনি পড়ুয়াদের আর একটু ধৈর্যশীল হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘‘দ্রুত এ সবের সমাধান করব আমরা।’’ সময়ে পরীক্ষার ফল হাতে পাওয়া পড়ুয়াদের অধিকার বলে মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সুবলচন্দ্র দে। তিনি বলেন, ‘‘কিছু কারিগরি ত্রুটি ও পরিকাঠামোর অভাবে সাময়িক এই সমস্যা হয়েছে। আমরা দ্রুত সমাধান করব।’’