মহম্মদ রফিক মল্লিক
গ্রামের স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময়েই চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন মাস্টারমশাই। জয়েন্ট এন্ট্রান্সের মেডিক্যালের ফল বেরোতে দরজা খুলে গেল সেই পথের। কাটোয়ার অর্জুনডিহির মহম্মদ রফিক মল্লিক ১২১৬ র্যাঙ্ক করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সবাইকে।
রফিকের বাবা সিরাজুল হক মল্লিক জানান, আড়াই বিঘা জমি চাষ করে সাত জনের সংসার চালান তিনি। তাতেও প্রতি বর্ষায় জমি ডুবে না খেয়ে কাটাতে হয় কয়েক দিন। তবু পড়াশোনা থামায়নি ছেলে। আলমপুর হরিমোহন উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক দেওয়ার পরে পাড়া-প্রতিবেশী ও আত্মীয়ের আর্থিক সহায়তায় হুগলির শেওড়াফুলি বিবেকানন্দ উচ্চবিদ্যালয়ে পড়তে যায় সে। সঙ্গে আলআমিন মিশন থেকে অর্ধেক খরচে চলে মেডিক্যালের প্রশিক্ষণ। উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৩৬ নম্বর পাওয়ার পরে দু’বছর একটানা মেডিক্যালের পড়া চালায় সে। ফলও মেলে। তবে ভাল রেজাল্টেও খরচ জোগানোর চিন্তা যায়নি রফিকের। তার কথায়, ‘‘এত দিন আত্মীয়দের সাহায্যে পড়েছি। এরপর কী করে পড়া চালিয়ে যাব জানি না। তবে ইচ্ছে কলকাতায় প্রথম সারির মেডিক্যাল কলেজ থেকে ডাক্তারি পড়া।’’ যদিও বাবার গলায় ছেলেকে পড়ানোর প্রতিজ্ঞা। তিনি বলেন, ‘‘টাকার অভাবে বড় ছেলেকে উচ্চ মাধ্যমিকের পর আর পড়াতে পারিনি। চেয়েচিন্তে হলেও রফিককে পড়াব।’’ পাশ থেকে মা রৌশেনারা বিবি বলেন, ‘‘ওকে ডাক্তার হতেই হবে।’’ আলমপুর পঞ্চায়েত প্রধান মোল্লা নজরুল ইসলামের কথায়, ‘‘ছেলেটি গ্রামের গর্ব। ও যাতে সরকারি সাহায্য পায় সেই চেষ্টা করব।’’