বারবার চুরি, পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ হস্টেলে

খবর পেয়ে বর্ধমান থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশের গাড়ি আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখান আবাসিকেরা। ঘণ্টা তিনেক পুলিশের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ চলে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৯ ০৩:১২
Share:

পুলিশের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র।

জিনিসপত্র চুরি যাচ্ছে নিয়মিত। মোবাইল, ল্যাপটপ থেকে টিভি, বাদ যাচ্ছে না কিছুই। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে এমন চুরির ঘটনা নিয়ে পুলিশ উদাসীন, অভিযোগ পড়ুয়াদের। মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে চুরির চেষ্টার অভিযোগে কয়েকজনকে পাকড়াও করেন ছাত্রেরা। খবর পেয়ে বর্ধমান থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশের গাড়ি আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখান আবাসিকেরা। ঘণ্টা তিনেক পুলিশের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ চলে।

Advertisement

ছাত্রদের অভিযোগ, গত কয়েক মাস ধরেই ছাত্রাবাসে চুরির ঘটনা ঘটছে। সরস্বতী পুজোর সময়ে রবীন্দ্র ছাত্রাবাস থেকে গোটা পনেরো মোবাইল, দু’টি ল্যাপটপ চুরি যায়। সেট টপ বক্স-সহ আস্ত টিভিও উধাও হয়ে যায়। শুধু রবীন্দ্র ছাত্রাবাস নয়, চিত্তরঞ্জন, নেতাজি, অরবিন্দ হস্টেলেও এই ঘটনা প্রায়ই ঘটছে বলে ছাত্রদের অভিযোগ। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগও দায়ের করা হয়।

আবাসিকদের দাবি, এ দিন দুপুর আড়াইটে নাগাদ রবীন্দ্র ছাত্রাবাস থেকে জনা পাঁচেক যুবককে কেবল তার কাটতে দেখেন কয়েক জন ছাত্র। তাঁরা ছুটে গিয়ে এক জনকে ধরে ফেললেও বাকিরা পালিয়ে যায়। কিন্তু রাস্তা দিয়ে তার নিয়ে পালানোর অভিযোগে এলাকার কিছু লোকজন চার জনকে ধরে। রবীন্দ্র ছাত্রাবাসের আবাসিকেরা তাদের ধরে এনে হস্টেলে রাখেন। খবর পেয়ে পুলিশ ওই যুবকদের থানায় আনতে যায়। তখনই বিক্ষোভ শুরু করেন ছাত্রেরা। তাঁদের দাবি, পুলিশ থানায় নিয়ে যাওয়ার দিন কয়েকের মধ্যে ধৃতেরা জামিন পেয়ে ফের একই কাজ শুরু করে। আগে তাঁদের চুরি যাওয়া জিনিস উদ্ধার করতে হবে, তার পরে আটক যুবকদের থানায় নিয়ে যেতে দেওয়া হবে বলে দাবি করেন ছাত্রদের অনেকেই। হস্টেল চত্বরে ছাত্রেরা পুলিশের গাড়ির সামনে বসে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন।

Advertisement

রবীন্দ্র ছাত্রাবাসের আবাসিক ব্রিটেন মণ্ডল অভিযোগ করেন, হস্টেলে সকাল এবং সন্ধ্যা, দু’বেলাই ৬টা থেকে ১০টা পর্যন্ত কোনও রক্ষী থাকেন না। অনেকেই এই সময়ে পড়াশোনার জন্য বাইরে বেরোন। সেই সুযোগে পাঁচিল টপকে ঢুকে হস্টেলে চুরি করছে দুষ্কৃতীরা। ছ’টি হস্টেল থেকে অন্তত ৫০টি মোবাইল চুরি হয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ। ছাত্র সাব্বির হোসেন, আশিস কোলে, পল্লব হালদারদের দাবি, থানায় অভিযোগ করেও কিনারা হয়নি। এ দিন আটক যুবকেরা আগেও হস্টেলে চুরির কথা তাঁদের কাছে স্বীকার করেছে। তাই আগে খোয়া যাওয়া জিনিস উদ্ধারের দাবি জানানো হয়েছে বলে তাঁদের দাবি।

আবাসিক কামরুজ জামান অভিযোগ করেন, ছাত্রাবাসগুলিতে কোনও নিরাপত্তা নেই। সব সময় রক্ষী থাকেন না। রাতে দু’দিকের রাস্তাও অন্ধকার থাকে। বারবার বলার সত্ত্বেও আলোর ব্যবস্থা করা হয়নি। রাতে ছাত্রী আবাসের মেয়েরা রাস্তা দিয়ে গেলে তাঁদের ব্যাগ, মোবাইল ছিনতাই হয়। শিক্ষিকারও একইর কম সমস্যায় পড়েন। তাঁর দাবি, প্রশাসন এ বিষয়ে নজর দিক।

এ দিন ঘটনার খবর পেয়ে হস্টেলে এসে স্থানীয় কাউন্সিলর বশির আহমেদ ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলেন। ঘণ্টা তিনেক পরে পুলিশ তদন্ত করে খোয়া যাওয়া জিনিস উদ্ধারের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ থামে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সম্পাদক অভিষেক নন্দীও হস্টেলগুলিতে নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি করেছেন। পুলিশকেও এই এলাকায় সক্রিয় থাকার আবেদন করেছেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement