ধর্না কর্মসূচি। নিজস্ব চিত্র
বিজেপি-কে বন্ধু ভাবে সিপিএম ও কংগ্রেস— এমন অভিযোগ করে কয়লা শিল্পক্ষেত্রে বেসরকারিকরণের ‘তোড়জোড়’-এর বিরোধিতায় তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি ‘একলা চলা’র কথা জানালেন সংগঠনের সর্বভারতীয় সম্পাদক দোলা সেন। এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছে শ্রমিক সংগঠন সিটু ও আইএনটিইউসি।
মঙ্গলবার ডিসেরগড়ে ইসিএলের সদর দফতরে আয়োজিত ধর্না মঞ্চে দোলা সেন বলেন, ‘‘আন্দোলনের ক্ষেত্রে আমরা একলা চলব। কারণ, সিপিএম ও কংগ্রেস মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শত্রু ভাবে আর বিজেপি-কে বন্ধু। তাই কাউকেই সঙ্গে চাই না।’’
এই মন্তব্যের বিরোধিতা করে আইএনটিইউসি-র কেন্দ্রীয় নেতা চণ্ডী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খনিকর্মীদের স্বার্থরক্ষায় ওঁদের বহু বার যৌথ আন্দোলনে ডাকা হয়েছে। কিন্তু কখনও আসেননি। ওঁরা খনিকর্মীদের ভাল চান না।’’ সিটুর জেলা সম্পাদক বংশগোপাল চৌধুরীও অভিযোগ, ‘‘ওঁরা শ্রমিক আন্দোলন ভাঙতে চাইছেন। আগেও কোনও দিন খনি বাঁচাতে আইএনটিটিইউসি বা তৃণমূল কোনও ভূমিকা নেয়নি। এর থেকেই বোঝা যায়, বিজেপি-কে কারা বন্ধু ভাবে।’’ অভিযোগ অস্বীকার করেছে আইএনটিটিইউসি। পক্ষান্তরে, যাঁদের নিয়ে এমন চাপান-উতোর, সেই বিজেপি-র পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের কটাক্ষ, ‘‘দেশে আমরাই যে প্রধান দল, অন্যদের মন্তব্যে তা বোঝা যাচ্ছে।’’
শ্রমিক সংগঠনগুলি জানায়, সম্প্রতি কোল ইন্ডিয়ার একাধিক অছি সংস্থার প্রায় ৫০০টি খনিকে বেসরকারি মালিকানার হাতে তুলে দেওয়ার কথা জানিয়েছে কয়লা মন্ত্রক। এর পরেই দেশের নানা প্রান্তে শুরু করেছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন। পথে নেমে আন্দোলনে শুরু না করলেও বেসরকারিকরণের বিরোধিতা করেছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন বিএমএস-ও।
এ দিন বেসরকারিকরণের বিরোধিতায় যৌথ ভাবে কর্মসূচিটির আয়োজন করে তৃণমূল ও আইএনটিটিইউসি। মঙ্গলবার সেখানে যোগ দেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি। ওই সভাতেই দোলা সেনের হুঁশিয়ারি, ‘‘বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা না হলে, সংস্থার সদর কার্যালয়ের সামনে দু’লক্ষ মানুষের জমায়েত করে লাগাতার ধর্না-অবস্থান করা হবে।’’ কর্মসূচির শেষে সংগঠনের একটি প্রতিনিধি দল ইসিএলের সিএমডি-র সঙ্গে দেখা করে একটি প্রতিবাদপত্রও তুলে দেয়। ইসিএল জানায়, সেটি যথাস্থানে পাঠানো হবে।
এ দিকে, ইসিএলের ‘জয়েন্ট কনসালটেটিভ কমিটি’ অনুমোদিত শ্রমিক সংগঠন হিসেবে আইএনটিটিইউসি এখনও স্বীকৃতি না পাওয়া নিয়ে সরব হন জিতেন্দ্রবাবু। তাঁর দাবি, এর ফলে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিক সংগঠনগুলির যৌথ আলোচনায় তাঁরা জায়গা পান না।