ধৃতদের নিয়ে আদালতের পথে পুলিশ ও এসটিএফ। নিজস্ব চিত্র।
বাড়িতেই কারখানা বানিয়ে হেরোইন তৈরির মূল হোতা কাটোয়ার প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীর মণিপুর যোগ! কলকাতা বিমানবন্দরের কাছে নারায়ণপুর এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে শনিবার গভীর রাতে মণিপুরের বাসিন্দা সাজিদ হাসান এবং সমরজিৎ সিংহ নামে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করেছে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ। উদ্ধার হয়েছে দু’কেজিরও বেশি মরফিন। পুলিশ সূত্রে খবর, পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার রাজুয়া গ্রামে প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীর বাড়িতে হেরোইন তৈরিতে যুক্ত ছিলেন ধৃত দু’জন। সাজিদের বাড়ি মণিপুরের লিলং এলাকায়। সমরজিৎ মণিপুরের কাকচিং এলাকার বাসিন্দা। এই ঘটনায় আন্তঃরাজ্য মাদক পাচার চক্রের যোগ রয়েছে বলে কার্যত নিশ্চিত এসটিএফ।
তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, নারায়ণপুর এলাকায় একটি ফ্ল্যাটে তাঁরা থাকতেন। ওই ফ্ল্যাটটি ধৃত প্রাক্তন নৌসেনা কর্মী গোলাম মুর্শেদের ভাই মুজফ্ফর হোসেনের। বিমানবন্দরে কর্মরত মুজফ্ফর পলাতক। ধৃতদের সাহায্যে বিভিন্ন রাজ্য থেকে মরফিন সংগ্রহ ও তা থেকে হেরোইন তৈরি করে পাচারের কাজ হত বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।
রবিবার মাদক-কাণ্ডে জড়িত অভিযোগে ধৃত ছ’জনকে কাটোয়া মহকুমা আদালতে পেশ করা হলে তাঁদের এক দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। সোমবার তাঁদের আবার বর্ধমানের এনডিপিএস বিশেষ আদালতে তোলা হবে। ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে এসটিএফ।
শুক্রবার রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রাজুয়া গ্রামে হানা দিয়ে চোখ কপালে উঠেছিল এসটিএফের গোয়েন্দাদের। গ্রামের নির্জন জায়গায় তৈরি বিলাসবহুল বাড়ির ভিতরে ল্যাবরেটরি বানিয়ে রমরমিয়ে চলছিল হেরোইন তৈরির কারখানা! বাড়ির মালিক, প্রাক্তন নৌসেনা কর্মী গোলাম মুর্শেদকে গ্রেফতার করেছে এসটিএফ। জানা যায়, চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর রাজুয়া গ্রামে বাড়িটি তৈরি করেন মুর্শেদ। সঙ্গে আরও তিন জন— আঙুর আলি, মিনারুল শেখ ও মিঠুন শেখকেও গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে আঙুর আলি ও মিনারুলের বাড়ি নদিয়ার কালীগঞ্জ এলাকায়। মিঠুন কাটোয়ার আলমপুরের বাসিন্দা। এসটিএফ বাড়ি থেকে মোট ৯.৭ কেজি মরফিন উদ্ধার করে। ল্যাবরেটরিতে মরফিন থেকে হেরোইন তৈরি করে তা সরবরাহ করা হত জেলা পেরিয়ে অন্যান্য জায়গায়। পাশাপাশি উদ্ধার করা হয় ৯ লক্ষাধিক টাকা।