বডি ক্যামেরা লাগিয়ে তল্লাশি কালনায়। নিজস্ব চিত্র।
ভোট ঘোষণা না হলেও নির্বাচনে কমিশনকে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সাপ্তাহিক রিপোর্ট পাঠানো শুরু হয়ে গিয়েছে। কমিশন প্রতিটি জেলা থেকে নাকা-তল্লাশির রিপোর্টও চেয়ে পাঠিয়েছে। লোকসভা ভোটের আগে রাজ্যের প্রতি জেলায় রাস্তায় যে কোনও গাড়ি, মোটরবাইক, ট্রাকে তল্লাশি ভিডিয়োগ্রাফির আওতায় করতে হবে, জেলা পুলিশকে এমন নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। জানুয়ারির গোড়ায় পুলিশ সুপার এবং রাজ্যের শীর্ষ পুলিশ আধিকারিকদের একটি ভিডিয়ো-বৈঠকে নাকা তল্লাশি নিয়ে প্রতিটি জেলার পুলিশকে আরও সতর্ক হওয়ার বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
রাজ্য পুলিশের এক কর্তা বলেন, “ভোট যত এগিয়ে আসবে, নাকা-তল্লাশির উপরে জোর দিতে বলবে কমিশন। এখনই সাপ্তাহিক রিপোর্টে নাকায় কী কী ধরা হল, তার তথ্য দিতে হচ্ছে। এমনকী, কত টাকা জরিমানা হল, সেটাও জানাতে হচ্ছে। এ নিয়ে যাতে ভোটের মুখে যাতে অযথা বিতর্ক না হয়, সে জন্যই ডিজি সব জেলার পুলিশকে সতর্ক থাকতে বলেছেন।” ওই নির্দেশের পরেই প্রতিটি জেলার পুলিশ নাকা নিয়ে বাড়তি উদ্যোগী হয়েছে। নাকার জায়গাগুলিতে সিসি ক্যামেরা বসাচ্ছে পুলিশ। এ ছাড়া, পুলিশকে বডি-ক্যামেরা ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
হুগলির গুড়াপের কাছে নাকাবন্দির সময়ে শনিবার রাতে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই জেলার পুলিশ কর্তাদের কাছ থেকে জানা যায়, রীতিমতো তালিকা তৈরি করে নাকা-তল্লাশি হচ্ছে। শীর্ষ পুলিশ আধিকারিকদের কাছে বডি-ক্যামেরা থাকছে। উত্তরবঙ্গের একটি জেলার পুলিশ সুপার জানান, নতুন করে প্রতিটি থানা বডি-ক্যামেরা কিনছে। দক্ষিণবঙ্গের একটি পুলিশ জেলার সুপার বলেন, “নাকার জায়গায় সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। তল্লাশি নিয়ে কোনও বিতর্ক তৈরি হলে ফুটেজ় দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।”
পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলিশ সুপার আমনদীপ প্রতিটি থানায় নির্দেশ দিয়েছেন, যে কোনও তল্লাশি ভিডিয়োগ্রাফি করে রাখতে হবে। জেলায় শ’খানেক বডি-ক্যামেরা রয়েছে। সেগুলি প্রতিটি থানার ইনস্পেক্টর, ওসি ছাড়াও শীর্ষ আধিকারিকদের কাছে রয়েছে। বডি-ক্যামেরা না থাকলে সিসি ক্যামেরা রয়েছে, এ রকম জায়গায় তল্লাশি চালাতে হবে। কোনও কারণে সিসি ক্যামেরা না থাকলে মোবাইলে তল্লাশির ভিডিয়ো তুলে রাখতে হবে।
রাজ্য পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “তল্লাশি নিয়ে ভোটের আগে রাজনৈতিক দলগুলি কমিশনের কাছে অভিযোগ করেন। কমিশন রাজ্য পুলিশের কাছে রিপোর্ট চায়। এখন থেকে পরিকাঠামো গড়ে তল্লাশিতে জোর দিতে চাইছে রাজ্য পুলিশ। কোনও প্রশ্ন উঠলে ফুটেজ় দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ থাকবে।”