সভার প্রস্তুতিতে ব্যস্ততা। নিজস্ব চিত্র
শহরে প্রথম কোনও প্রশাসনিক বৈঠকে আসার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। তাই সাজ-সাজ রব কালনার অঘোরনাথ পার্ক স্টেডিয়ামে। প্রস্তুতি তদারকে যাতায়াত করছেন প্রশাসনের আধিকারিকেরা। শনিবার সভাস্থল ঘুরে দেখলেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি দেবু টুডু-সহ কর্তারা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ৩০ নভেম্বর বর্ধমানের পুলিশ লাইনে সভা করার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেইমতো প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন প্রশাসনের কর্তারা। কিন্তু শেষে সভাস্থল পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়। আপাতত ঠিক হয়েছে, প্রায় পাঁচ কোটি টাকা খরচ করে সদ্য সেজে ওঠা অঘোরনাথ পার্ক স্টেডিয়ামে সভা হবে। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আচমকা সভাস্থল পরিবর্তন হওয়ায় প্রস্তুতি নিয়ে কার্যত যুদ্ধকালীন তৎপরতা শুরু হয়েছে।
প্রশাসনেরা কর্তারা জানান, বৈঠকের জন্য ভাল মাঠ পাওয়া সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। তাই খেলার মাঠের কিছুটা ক্ষতি হবে জেনেও বেছে নিতে হয়েছে অঘোরনাথ পার্ক স্টেডিয়ামটি। সরু রাস্তা-সহ বেশ কয়েকটি সমস্যার কথা ভেবে অন্যত্রও মাঠের খোঁজ করা হয়েছিল। ফাঁকা মাঠে পরিকাঠামো তৈরি করে সভার কথাও ভাবা হয়। কিন্তু, ফসলের ক্ষতি-সহ নানা দিক ভেবে সেই চিন্তা থেকে সরে আসেন প্রশাসনের আধিকারিকেরা।
জেলা প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা যায়, হেলিপ্যাডের জমি নিয়ে খানিক সমস্যা তৈরি হয়। সধারণত, মুখ্যমন্ত্রীর সভা থাকলে দু’টি হেলিপ্যাড তৈরি রাখতে হয়। কালনা শহর ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় হেলিপ্যাডের জন্য গোটা দশেক জায়গা দেখা হয়। কোথাও জায়গা ছোট। আবার কোথাও গাছপালা সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। শেষে শহরে ভাগীরথীর পাশে ও কালনা ২ ব্লকের ওমরপুরে হেলিপ্যাডের জন্য জমি চিহ্নিত করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘দু’টি জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে হেলিপ্যাডের জন্য। পরীক্ষার পরে কোনটি হেলিপ্যাড হবে, সে নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, অঘোরনাথ পার্কে ঢোকার জন্য অন্তত পাঁচটি জায়গা থাকবে। কোন পথ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সভাস্থলে ঢুকবেন, তা স্থির করবেন তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আধিকারিকেরা। ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে মঞ্চ গড়ার কাজ। মাপজোক করে চিহ্নিতকরণ হয়েছে ডি-জোন। দুপুরে সভা, তাই মাথায় থাকবে তাই ছাউনির ব্যবস্থা। মাঠের চারপাশে গ্যালারি থেকে দর্শকদের দেখতে অসুবিধা হতে পারে, সে কথা মাথায় রেখে সেখানে রাখা হচ্ছে জায়ান্ট স্ক্রিন। মূল মঞ্চের এক পাশে লোকশিল্পীদের মঞ্চ থাকার কথা। অন্য পাশে উপভোক্তারা। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের হাতে নানা সরঞ্জাম তুলে দেবেন, এমন কর্মসূচি রয়েছে।
শহরের সরু রাস্তা ও ঘেরা স্টেডিয়ামে লোকসমাগম নিয়ে ভাবনা রয়েছে প্রশাসনের কর্তাদের। শনিবার কালনা ২ ব্লকে বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। ছিলেন জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি দেবুবাবু। বৈঠক শেষে স্বপনবাবু, দেবুবাবু, কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু, পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ স্টেডিয়াম পরিদর্শন করেন। স্বপনবাবু বলেন, ‘‘কালনা মহকুমার মানুষেই মাঠ উপচে পড়বে। জেলার অন্য প্রান্ত থেকে আসা মানুষদের জায়গা দেওয়া নিয়ে চিন্তায় রয়েছি।’’ তিনি জানান, স্টেডিয়ামের বাইরে থেকেও যাতে মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠান মানুষ দেখতে পান, সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।