প্রতীকী ছবি।
জিতেন্দ্র তিওয়ারি ইস্তফা দিয়েছিলেন। এর পরে পশ্চিম বর্ধমানে তৃণমূলের জেলা সভাপতি এবং আসানসোলের পুর-প্রশাসক কে হবেন, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল, এমনই খবর তৃণমূল সূত্রে। শুক্রবার দিনভর ঘোরাফেরা করেছে জেলা তৃণমূলের কার্যত সব ‘গুরুত্বপূর্ণ’ নেতার নামই। তবে, রাতের পরে জিতেন্দ্রবাবু কলকাতায় ইঙ্গিত দিলেন তিনি তৃণমূলেই থাকছেন। সে ক্ষেত্রে পুরনো পদ তিনি পাবেন কি না, দলের অন্দরে ঘুরছে সেই প্রশ্ন।
দলীয় কর্মীদের একাংশের মতে, জেলা সভাপতি হিসেবে মলয় ঘটক, ভি শিবদাসন, উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়, অর্পূব মুখোপাধ্যায়, তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী— সবার নামই ঘোরাফেরা করছে। এর মধ্যে, নরেন্দ্রনাথবাবু ছাড়া, বাকিদের জেলা সভাপতি হওয়ার অতীত অভিজ্ঞতা রয়েছে। তবে তাপসবাবু কংগ্রেসের জেলা সভাপতি ছিলেন এক সময়ে। তৃণমূলের এই পদে আসেননি।
তবে, কর্মীদের একাংশের মতে, অতীতে মলয়বাবুর অনুগামীদের সঙ্গে অন্য জেলা নেতৃত্বের অনুগামীদের বারবার কোন্দলের অভিযোগ উঠেছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, অপূর্ববাবু সম্প্রতি দুর্গাপুরে কাউন্সিলরদের বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোন পেলেও তিনি অন্তত চার বছর ধরে ‘প্রায় নিষ্ক্রিয়’। উজ্জ্বলবাবু জেলা সভাপতি থাকার সময়েও তাঁর কর্মকাণ্ড কুলটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল বলে দাবি। পাশাপাশি, তাপসবাবুর সাংগঠনিক ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে দলের অন্দরে। নরেন্দ্রনাথবাবু মূলত পাণ্ডবেশ্বরের নেতা। কিন্তু তাঁর নাম ক্ষীণ হলেও ভেসে ওঠার কারণ, সদ্য দলত্যাগী জিতেন্দ্র তিওয়ারির সঙ্গে তাঁর ‘সুসম্পর্ক’। তা ছাড়া, দলীয় ও স্থানীয় স্তরে হলেও প্রশাসনিক নানা পদে থাকার অভিজ্ঞতাও রয়েছে তাঁর। এই পরিস্থিতিতে সবাইকে বাদ দিয়ে ‘নতুন মুখ’ হিসেবে নরেন্দ্রনাথবাবুকে জেলা সভাপতি করা হলেও আশ্চর্যের কিছু নেই বলে মত তৃণমূলের অন্দরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জনের।
পুর-প্রশাসকের পদে উজ্জ্বলবাবু এবং অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় আসতে পারেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা রয়েছে। সাবেক কুলটি পুরসভার চেয়ারম্যান, বর্তমানে আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্বে উজ্জ্বলবাবু। এ দিকে, অমরনাথবাবু ২৮ বছর ধরে আসানসোল পুরসভার নির্বাচিত প্রতিনিধি। হয়েছেন, ডেপুটি মেয়র, চেয়ারম্যানও। তবে কোনও নেতাই এই গুঞ্জনে প্রকাশ্যে কান দিতে চাননি। ভি শিবদাসন, উজ্জ্বলবাবু, অপূর্ববাবুরা বলেন, ‘‘আমরা দিদির অনুগামী। দল যা নির্দেশ দেবে, সেই মতোই কাজ করব।’’ একই কথা জানান অমরনাথবাবুও, তাপসবাবুরাও। নরেন্দ্রনাথবাবুর দাবি, ‘‘আমি দলে নিচুতলার কর্মী। তাই কিছু বলার নেই।’’ কোনও মন্তব্য করতে চাননি তাপসবাবু। মলয়বাবুকে ফোন ও মেসেজ করা হলেও উত্তর মেলেনি। যদিও দলের পশ্চিম বর্ধমান জেলার মুখপাত্র অশোক রুদ্র বলেন, “আলোচনা তো হচ্ছেই। রাজ্য নেতৃত্বই শেষ কথা বলবেন।’’