—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি। Sourced by the ABP
শেষবার যখন কালনায় সিপিএমের জেলা সম্মেলন হয়েছিল, তখন সদ্য মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসেছিলেন জ্যোতি বসু। পরে ধীরে ধীরে কালনা হয়ে উঠেছিল বামেদের দুর্ভেদ্য ঘাঁটি। তার পরে ৪৬ বছর কেটে গিয়েছে। সিপিএমের উত্থান ও পতন দুই-ই দেখেছে এই শহর। রাজ্যপাট এবং ক্রমাগত জনসমর্থন হারিয়ে ভোট-রাজনীতিতে সিপিএম এখন রাজ্যে তৃতীয় শক্তি। সাড়ে চার দশক পরে সেই কালনাতেই সিপিএমের জেলা সম্মেলন হতে চলেছে আগামী ২৭-২৯ ডিসেম্বর। শহর জুড়ে তৈরি হয়েছে তোরণ। তাতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মতো মনীষীদের উদ্ধৃতি জায়গা পেয়েছে। সম্মেলন উপলক্ষে কয়েকশো দেওয়াল লিখেছেন দলের কর্মীরা। সকলেরই প্রশ্ন, ঘুরে দাঁড়ানোর পথের খোঁজ কি তারা পাবে? নতুন জেলা কমিটিতে তরুণ প্রজন্মের ক’জনের জায়গা হয়, তা নিয়েও কৌতূহল রয়েছে দলে।
দলীয় সূত্রের খবর, কালনা পুরশ্রী মঞ্চে জেলা সম্মেলনে যোগ দেবেন প্রায় ৪৫০ প্রতিনিধি। দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের বাড়িতে তাঁরা থাকবেন। সিপিএমের পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির বর্তমান সদস্য সংখ্যা ৫৫। তাঁদের মধ্যে ১২ জন সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য। দলে বৃদ্ধতন্ত্র নির্মূল করতে সর্বত্রই তরুণদের এগিয়ে দিচ্ছে সিপিএম। জেলায় তার ছাপ কতটা পড়বে, জানতে আগ্রহী রাজনীতির পর্যবেক্ষকেরা।
জেলায় সিপিএমের ৩১টি এরিয়া কমিটি রয়েছে। সম্প্রতি সেগুলির সম্মেলন শেষ হয়েছে। দলের এক জেলা নেতার কথায়, ‘‘নতুন এরিয়া কমিটিগুলিতে ৩০-৫০ বছর বয়সিদের বেশি করে জায়গা দেওয়া হয়েছে। জেলা সম্মেলনেও এই ধারা বজায় থাকলে অনেক অভিজ্ঞ, দক্ষ নেতার নতুন কমিটিতে জায়গা হবে না।’’
দলের প্রবীণ এক নেতা বলেন, ‘‘কালনা শহরে শেষ বার জেলা সম্মেলন হয়েছিল ১৯৭৭-র ৩০, ৩১ ডিসেম্বর এবং ১৯৭৮ পয়লা জানুয়ারি। অবিভক্ত বর্ধমান জেলার সেই সম্মেলনে শেষ দিন প্রকাশ্য সমাবেশে অঘোরনাথ পার্ক স্টেডিয়ামে বক্তৃতা করেছিলেন জ্যোতি বসু। তখন সদ্য আমরা রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছি। সে দিনের উন্মাদনা ভোলার নয়।’’ এ বার জেলা সম্মেলনের আয়োজনের দায়িত্বে রয়েছে কালনা শহর এবং কালনা ১ ও ২ এরিয়া কমিটি। সম্মেলনের প্রথম দিন কালনা নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় প্রকাশ্য সমাবেশে বক্তৃতা করবেন রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। সম্মেলনেও হাজির থাকবেন তিনি।
জেলা সম্মেলন উপলক্ষে বাড়ি বাড়ি প্রচারে নারী নিরাপত্তা, জীবনদায়ী ওষুধের দামবৃদ্ধি, বিদ্যুতের স্মার্ট মিটার বাতিলের মতো বিষয়গুলি প্রচারে আনছে সিপিএম। চলছে চাল এবং অর্থ সংগ্রহে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা।