এক আদিবাসী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে কালনায়। বকুল হেমব্রম নামে এক যুবককে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। পুলিশের অভিযোগ, কিশোরীর মেডিক্যাল পরীক্ষা না করেই কালনা মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে দেন তাকে। কোনও কারণ না দেখিয়ে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ওই পরিবারকে হয়রান করা হয়েছে বলেও পুলিশের দাবি। কালনা মহকুমা হাসপাতালের সহকারী সুপার গৌতম বিশ্বাসের আশ্বাস, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। এ দিন ধৃতকে কালনা আদালতে তোলা হলে চার দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়।
লিখিত অভিযোগে ওই কিশোরীর পরিবারের দাবি, বৃহস্পতিবার মেয়ে বাড়িতে একাই ছিল। তখনই প্রতিবেশী বকুল ঘরে ঢুকে জোর করে ধর্ষণ করে তাকে। কাউকে না জানানোর জন্য হুমকিও দেয়। মেয়েটি প্রথমে কিছু না বললেও শনিবার পরিজনেদের বিষয়টি জানায়। রাতেই অভিযোগ জমা পড়ে। বকুলকে গ্রেফতারের পরে কিশোরীকেও রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ কালনা মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। পুলিশের অভিযোগ, রাত ২টো পর্যন্ত অপেক্ষার পরে এক মহিলা চিকিৎসক ওই কিশোরীকে ঠিকঠাক করে না দেখেই প্রায় ৫৫ কিলোমিটার দূরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য রেফার করে দেন। পুলিশের দাবি, বহু বছর ধরে এই হাসপাতালে এই ধরনের মেডিক্যাল পরীক্ষা হয়। সেই কারণে ওই রাতে কিশোরীকে বাড়ি পাঠিয়ে রবিবার বেলা ১১টা নাগাদ ফের মেডিক্যাল পরীক্ষার আবেদন জানানো হয়। কিশোরীর সঙ্গে ছিলেন তার মা-বাবা, একজন মহিলা কনস্টেবল এবং ঘটনার তদন্তকারী অফিসার। অভিযোগ, বিকেল ৪টে পর্যন্ত বারবার আবেদন জানানোর পরেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। হাসপাতালের দাবি, বিষয়টি নিয়ে আর একজন চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। যেহেতু একজন চিকিৎসক রেফার লিখেছেন, তাই তিনিও আগ্রহ দেখাননি।
কালনা থানার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘অভিযোগকারিণী যাতে বিচার পায় তার জন্য সব কিছুই দ্রুত করার চেষ্টা হয়। সোমবার কিশোরীকে আমরা পরীক্ষার জন্য বর্ধমানে নিয়ে যাব। তবে যে ভাবে ওই পরিবার এবং পুলিশের লোকজনকে হয়রান হতে হল, তা ভাবা উচিত স্বাস্থ্য দফতরের।’’ এই ধরনের মামলায় মেডিক্যাল পরীক্ষায় দেরি হলে অপরাধীর সুবিধা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে বলেও জানান তিনি।
হাসপাতালের সহকারী সুপার গৌতমবাবু বলেন, ‘‘কেন ওই কিশোরীকে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হল, তা জানতে চাওয়া হবে ওই মহিলা চিকিৎসকের কাছে।’’