জায়গাবদল দুই প্রতিমার। নিজস্ব চিত্র
মন্দিরে দুই প্রতিমার অবস্থান বদল! কাটোয়া পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সার্কাস ময়দানে নাগরিক কল্যাণ সর্বজনীনের পুজোয় এই দৃশ্য সোমবার রাতে দেখা গিয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। আর তা দেখে, পুজোর অধিকার কোন ‘পক্ষের’ হাতে থাকে, তা নিয়ে এলাকায় জল্পনা তুঙ্গে।
এ দিন রাতে দেখা গেল, রবিবারও বেদিতে থাকা প্রতিমাটি দেওয়ালের দিকে মুখ ঘুরিয়ে রাখা হয়েছে। ঘটনাচক্রে, ওই মূর্তিটি স্থানীয় কাউন্সিলর শ্যামল ঠাকুর ও তাঁর ঘনিষ্ঠেরা ওই জায়গায় বসিয়েছিলেন বলে পুজো কমিটি সূত্রে জানা যায়। এ দিকে, বেদি থেকে হাতখানেক দূরে দুর্গার অন্য একটি প্রতিমা রাখেন পরিতোষ পাল, শঙ্করীপ্রসাদ ঘোষ-সহ কয়েকজন। তাঁরা শ্যামলবাবুর বিরুদ্ধ গোষ্ঠী বলেই এলাকায় পরিচিত। সোমবার তাঁদের রাখা মূর্তিটি বেদিতে রাখা তো বটেই, অঙ্গরাগের কাজও শুরু হয়েছে।
কাটোয়া থানা সূত্রে জানা যায়, আইসি বিকাশ দত্তের উপস্থিতিতে দু’পক্ষকে নিয়ে সোমবার রাতে বৈঠক হয়। সেখানে নানা যুক্তি, পাল্টা যুক্তি দেখান দু’পক্ষই।
যদিও দু’পক্ষের টানাপড়েন এ দিনও দেখা গিয়েছে। পরিতোষবাবুদের দাবি, ‘‘২১ সদস্যের পুজো কমিটির মধ্যে ১৭ জনই কাউন্সিলরের বিপক্ষে। তাই, রেজিলিউশনের মাধ্যমে কমিটি তৈরি করে শঙ্করীপ্রসাদবাবুকে নতুন সম্পাদক করা হয়।’’ আর কাউন্সিলর বলেন, ‘‘পুজো নিয়ে রাজনীতি ভাল লাগে না। এত দিন পুজো করে আসছিলাম, তাই প্রতিমা মন্দিরে তুলেছিলাম। এখনও কেউই পুজোর অনুমতি পায়নি। কিন্তু ওঁরা প্রতিমা বেদি থেকে নামিয়ে মন্দিরের এক কোণে রেখেছেন। আমি বাধা দিইনি।’’ সেই সঙ্গে কাউন্সিলর এ-ও জানান, প্রতি বছরের মতো এ বারেও মঞ্চ বেঁধে বস্ত্র বিতরণের অনুষ্ঠান তিনি করবেনই।
কিন্তু এখনও কোনও পক্ষই পুজোর অনুমতি পায়নি। তার আগেই কেন এই ঘটনা, তা নিয়েও জল্পনা রয়েছে শহরে। পরিতোষবাবুর দাবি, ‘‘আমরাই অনুমতি পাব বলে বিশ্বাস করি। তাই রং করা শুরু হয়েছে। শ্যামলবাবুদের মূর্তিটি নিয়ে কী করা হবে, তা নিয়ে পুজো কমিটি এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।’’
বিষয়টি নিয়ে মহকুমাশাসক (কাটোয়া) সৌমেন পাল বলেন, ‘‘এখনও পুজোর অনুমতি দেওয়া শুরু হয়নি। তাই, ওই পুজোর বিবাদ নিজেদের মধ্যেই মেটানো উচিত। অনুমতি এক পক্ষই পাবে। বিষয়টি সবারই মেনে নেওয়া উচিত।’’