সুরক্ষাবিধি মেনে জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিয়ে বেরোচ্ছেন ছাত্রছাত্রীরা। দুর্গাপুরে। নিজস্ব চিত্র
দুর্গাপুর, আসানসোল ও বর্ধমানে জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ বাস চালাচ্ছে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা (এসবিএসটিসি)। অন্য দিকে, জেলার বিভিন্ন রুটে অতিরিক্ত মিনিবাস চালানো হচ্ছে বলে দাবি মিনিবাস মালিক সংগঠনের। মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) অর্নিবাণ কোলে জানিয়েছেন, দুর্গাপুরে তিনটি পরীক্ষাকেন্দ্র করা হয়েছে। তবে এ’দিন দু’টি কেন্দ্রে পরীক্ষা হয়। মহকুমাশাসক (আসানসোল) দেবজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, আসানসোলের বিদ্যাসাগর সরণি এলাকার একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা গ্রহণকেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। সব জায়গায় নির্বিঘ্নে পরীক্ষা হয়েছে বলে দাবি জেলা প্রশাসনের।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোলে ১৬৬ জনের মতো পরীক্ষা দেন। দুর্গাপুরের সগড়ভাঙা ও বিধাননগরে দু’টি পরীক্ষা কেন্দ্রে দুই শিফটে মোট ৩৭৩ জনের পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ‘সেফটি সার্কল’ তৈরি করে এক-এক করে পরীক্ষার্থীদের ভিতরে ঢোকানো হয়। তবে সবাই আসেননি, কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে জানান পরীক্ষার্থীরা। ডিএসপি টাউনশিপের এডিশন রোড থেকে এসেছিলের পরীক্ষার্থী শ্রমণা রায়চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘কোনও অসুবিধা হয়নি। পরীক্ষা ঠিকঠাক হয়েছে। তবে পরীক্ষার্থী কিছু কম ছিল।’’ বাঁকুড়ার খাতড়া থেকে এসেছিলেন আকাশ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘গাড়ি ভাড়া করে এসেছি। কোনও সমস্যা হয়নি।’’ পরীক্ষার্থী দেবলিনা খান বলেন, ‘‘করোনা নিয়ে আতঙ্ক ছাড়া আর কোনও সমস্যা ছিল না।’’ অভিভাবকদের প্রতিক্রিয়াও প্রায় একই। অভিভাবক সৌরভ দাসচৌধুরী বলেন, ‘‘ব্যবস্থা বেশ ভাল। তবে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চিন্তায় ছিলাম। যাক, পরীক্ষা হচ্ছে শেষ পর্যন্ত।’’ আর এক অভিভাবক বলেন, ‘‘হঠাৎ প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে একটু দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। পরীক্ষা হবে কি হবে না, তা নিয়ে
চাপে ছিলাম।’’
এ দিকে এসবিএসটিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুর, বেলঘরিয়া ও জঙ্গলমহল— এই তিনটি ডিভিশনে ৫৫৭টি রুটে বাস চলাচল করছে। সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর গোদালা কিরণকুমার জানান, রাস্তার মাঝে পরীক্ষার্থীরা যেখানেই হাত দেখাবেন, সেখানেই তাঁদের বাসে তুলে নেওয়ার নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। দুর্গাপুর, আসানসোল ও বর্ধমানে সিটি সার্ভিসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বর্ধমানে জেলা পরিবহণ দফতরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে বাস চালানো হচ্ছে। পর্যাপ্ত সংখ্যক বাস প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পরিবহণ দফতর প্রয়োজন মতো সেখান থেকে বাস নিতে পারবে। সংস্থার ডিভিশনাল (দুর্গাপুর) ম্যানেজার ধৃতিমান সিংহ জানান, দুর্গাপুরে সকালে পরীক্ষাকেন্দ্রগুলিকে সংযোগ করে, ‘সিটি সার্ভিস’ বাস চালানো হয়েছে। গাঁধী মোড় থেকে মূলত ‘৮বি’ রুট ধরে বাসগুলি চালানো হয়েছে। অন্য দিকে, আসানসোলের ঊষাগ্রাম থেকে আসানসোলের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কমিশনারেটের পাশের পরীক্ষাকেন্দ্র পর্যন্ত বাস চালানো হয়েছে। কলকাতাতেও পরীক্ষার্থীদের জন্য এসবিএসটিসি’র তিনশো অতিরিক্ত বাস চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তবে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দুর্গাপুরের অন্যতম মিনিবাস মালিক সংগঠন ‘দুর্গাপুর প্যাসেঞ্জার ক্যারিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন’। সংগঠনের তরফে কাজল দে’র দাবি, ‘‘এ দিন জয়েন্টের পরীক্ষা আছে, তা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে। তবে কোথায় কোথায় পরীক্ষাকেন্দ্র তার তালিকা দেওয়া হয়নি। নিজেদেরকে খোঁজ নিয়ে মিনিবাস চালানোর ব্যবস্থা করতে হয়েছে।’’ এই বিষয়ে প্রশাসনের বক্তব্য চেষ্টা করেও মেলেনি।