কুলটি কলেজে তখন চলছে বিক্ষোভ। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
সেমেস্টারের ফি বৃদ্ধির প্রস্তাব প্রত্যাহারের দাবিতে কলেজে জামা খুলে প্রতিবাদ জানালেন কিছু ছাত্র। বৃহস্পতিবার কুলটি কলেজের এই ঘটনায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কলেজের মধ্যে এই ধরনের আন্দোলনের নিন্দা করেছেন শিক্ষকেরা। এ ভাবে জামা খুলে আন্দোলনে তাঁদের সমর্থন নেই বলে জানিয়েছেন তৃণমূল এবং টিএমসিপি-র জেলা নেতৃত্বও।
বিভিন্ন কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি সেমেস্টারের ফি বৃদ্ধির একটি প্রস্তাব ওঠে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে। তা জানাজানি হওয়ার পরেই বিভিন্ন কলেজে পড়ুয়ারা প্রতিবাদ শুরু করেন। কুলটি কলেজ সূত্রে জানা যায়, এ দিন দুপুরে টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের সদস্যেরা-সহ কিছু পড়ুয়া অধ্যক্ষের ঘরে বিক্ষোভ দেখাতে যান। অধ্যক্ষ সুপ্রিয় চক্রবর্তী এ দিন কলেজে ছিলেন না। তাঁর জায়গায় দায়িত্বে ছিলেন শিক্ষক তারক রায়। তাঁর সামনেই কিছু ছাত্র শার্ট, টি-শার্ট খুলে ফেলে দাবিদাওয়া জানাতে থাকেন। বেশ কিছুক্ষণ ধরে তা চলে। তারকবাবু বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর আশ্বাস দিলে ছাত্রেরা ফিরে যায়।
তারকবাবু বলেন, ‘‘ছাত্রদের জামা খুলতে দেখে আমি হতচকিত হয়ে গিয়েছিলাম। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন আচরণ বাঞ্ছনীয় নয়।’’ কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বৈঠকে গিয়েছিলাম। কী হয়েছে, খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ যদিও ওই ছাত্রদের দাবি, তাঁরা কোনও অশালীন বা অনৈতিক আচরণ করেন। প্রতিবাদ জানাতেই এমনটা করেছেন।
তবে তাঁদের এই আচরণকে সমর্থন করছেন না টিএমসিপি নেতৃত্বও। সংগঠনের জেলা সভাপতি কৌশিক মণ্ডল বলেন, ‘‘ফি বৃদ্ধির জন্য জেলা জুড়েই আন্দোলন চলছে। কিন্তু কুলটি কলেজের কিছু ছাত্র যে ভাবে আন্দোলন করেছেন, তা সমর্থনযোগ্য নয়।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারিও বলেন, ‘‘এমন আচরণ অনভিপ্রেত। ছাত্রেরা কোনও ভুল করে থাকলে তা সংশোধন করা হবে।’’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী জানান, ফি বৃদ্ধির প্রস্তাব আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। সে নিয়ে আলোচনার জন্যই এ দিন সব কলেজের অধ্যক্ষ, ছাত্র প্রতিনিধি, পরিচালন সমিতির সভাপতি ও সদস্যদের নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেখানে একটি কমিটি গড়া হয়েছে। ফি বৃদ্ধির প্রস্তাব তারা বিবেচনা করার পরে সন্তোষজনক সমাধানসূত্র বার করা হবে। তিনি বলেন, ‘‘কুলটি কলেজে যা ঘটেছে তা নিন্দনীয়। এ ভাবে আন্দোলন করা উচিত নয়। ওই ছাত্রদের দ্রুত শিক্ষকদের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।’’