ছবি: সংগৃহীত
জমি কিনে প্রতারিত হওয়ার অভিযোগের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার দাবিতে পুলিশ কমিশনারের দ্বারস্থ হলেন বেশ কয়েকজন বাসিন্দা। তাঁরা একটি আবাসন সংস্থার বিরুদ্ধে আসানসোল উত্তর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তার প্রতিলিপি বুধবার পুলিশ কমিশনার সুকেশ জৈনের দফতরে জমা দেন। কমিশনার পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন। এ দিনই জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থার আর্জি জানিয়েছেন আসানসোল উত্তরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়াও এমন প্রতারণার হাত থেকে ক্রেতাদের বাঁচাতে কিছু উদ্যোগ হচ্ছে।
ওই ক্রেতাদের অভিযোগ, আসানসোলের গাড়ুই লাগোয়া এলাকায় তাঁরা জমি কিনেছিলেন। দুর্গাপুরের একটি আবাসন সংস্থা ২০১২ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে ওই জমি তাঁদের বিক্রি করেছিল। তিন কাঠা করে প্লটের দাম পড়েছিল প্রায় ছ’লক্ষ টাকা। প্রায় বারোশো জন সেই জমি কেনেন। শ’তিনেক ক্রেতার জমি রেজিস্ট্রেশনও হয়েছে। বাকিদের এখনও তা হয়নি বলে অভিযোগ। ক্রেতাদের তরফে পরশুরাম সিংহ থানায় লিখিত অভিযোগ করেন, জমির ‘মিউটেশন’ করাতে গিয়ে তাঁরা জানতে পারেন, সেগুলি খাস জমি। তা জানার পরে, সেখানে তাঁরা কোনও নির্মাণকাজ করতে পারছেন না।
বিষয়টি জানার পরে অনেক ক্রেতা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তাঁদেরও খাস জমি বিক্রি করে প্রতারণা করা হয়েছে। গোটা বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হন তাঁরা। ন’জন ক্রেতা সোমবার আসানসোল উত্তর থানায় অভিযোগ করেন। বুধবার তাঁরা পুলিশ কমিশনারের দফতরে যান।
জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর সুত্রে জানা গিয়েছে, খাস জমির তথ্য লুকিয়ে বিক্রেতারা প্রতারণা করেছে। দফতরের আধিকারিকেরা জানান, এ রকম আরও কিছু অভিযোগ সম্প্রতি তাঁদের কাছে জমা পড়েছে। ছ’জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) খুরশিদ আলি কাদরি বলেন, ‘‘গাড়ুই লাগোয়া এলাকার ওই জমি খাস। ক্রেতাদের ভাল ভাবে খোঁজ নিয়ে জমি কেনা উচিত ছিল।’’
খুরশিদ আলি কাদরি জানান, এমন প্রতারণা থেকে ক্রেতাদের বাঁচাতে আবাসন সংস্থা ও প্রোমোটারদের প্রকল্প তৈরির আগে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের নো-অবজেকশন শংসাপত্র নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে প্রকল্প তৈরির আগেই জানা যাবে, কোনও খাস জমিতে প্রকল্প হচ্ছে কি না। তাঁর আরও পরামর্শ, জমি কেনার আগে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে জমির চরিত্র সম্পর্কে অবগত হওয়াও জরুরি।