জমিতে জমে রয়েছে জল। নিজস্ব চিত্র।
নিম্নচাপের কারণে সোমবার দুপুর পর্যন্ত তুমুল বৃষ্টিপাত হয়েছে কাঁকসা ব্লক জুড়ে। শুক্রবার থেকে লাগাতার বৃষ্টিপাতের ফলে বহু কৃষিজমি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে জাতীয় সড়কের বিভিন্ন সার্ভিস রোড-সহ বসতি এলাকাও। বেহাল
নিকাশির কারণে বসতি ভাসছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত জেলায় গড় বৃষ্টিপাত হয়েছে ১১৬.৮৫ মিলিমিটার। গত দু’দিনের থেকে এ দিন বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে জেলা জুড়ে। আসানসোলে ১৫১.৪ মিলিমিটার, দুর্গাপুরে ৬৯.৮ মিলিমিটার ও কাঁকসা ব্লকে বৃষ্টিপাত হয়েছে ১৬৬.২ মিলিমিটার।
সোমবার সকাল থেকে কাঁকসার বিদবিহার পঞ্চায়েত এলাকার নবগ্রাম, কৃষ্ণপুর, অজয়পল্লি, বনগ্রাম-সহ বিভিন্ন এলাকায় বহু জমি জলের তলায় চলে গিয়েছে। চাষি অমল ঘোষ বলেন, “টুমনি নদীতে জল বেড়ে গেলেই জমি জলের তলায় চলে যায়। কয়েকদিন আগেও একই সমস্যা হয়েছিল।” চাষিরা জানিয়েছেন, এই এলাকায় অনেকে আনাজ চাষও করেন। কয়েকদিন জমিতে জল জমে থাকলে আনাজ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। জেলা উদ্যানপালন দফতরের আধিকারিক মিলন বেসরা বলেন, “লাগাতার বৃষ্টির ফলে কয়েক জায়গায় জল জমার খবর এসেছে। তবে এখনও ক্ষয়ক্ষতির কোনও খবর মেলেনি। আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি।”
১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষও জানান, দু’দিকের লেনে জল জমে থাকায় রাস্তার বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জল জমে রয়েছে বাঁশকোপা ও রাজবাঁধ সার্ভিস রোডে। আধিকারিক প্রিয়াংশু সিংহের দাবি, “সড়কের পাশের নিকাশি নালাটি ব্যক্তিগত জায়গায় রয়েছে। তা বন্ধ করে দেওয়ায় জল নিকাশিতে সমস্যা হচ্ছে। তাই এই পরিস্থিতি।” সড়ক কর্তৃপক্ষ জানান, সমস্যার কথা দুর্গাপুর মহকুমা প্রশাসনের নজরে আনা হয়েছে। মহকুমা প্রশাসনের তরফে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখার আশ্বাস
দেওয়া হয়েছে।
জাতীয় সড়ক ছাড়াও বিদবিহার পঞ্চায়েতের শিবপুর থেকে অজয়ঘাট যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই রাস্তায় টুমনি নদীর উপরে একটি ভাসাপুল রয়েছে। নদীর জল বেড়ে যাওয়ায় সেই ভাসাপুলটি জলের তলায় চলে গিয়েছে। ওই পথ দিয়ে যাতায়াত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জলমগ্ন হয়ে পড়েছে কাঁকসার রেলপারের সারদাপল্লি, নতুনপাড়া এলাকা। বহু বাড়িতে জল ঢুকে গিয়েছে। বাসিন্দাদের দাবি, এই এলাকায় নিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। ফলে বার বার বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়ছে। এলাকাবাসী তথা কংগ্রেস নেতা পূরব বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, গত বছরও বহু বাড়ি জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল। সে সময় পঞ্চায়েতে নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতি করার দাবি জানানো হয়েছিল। কিন্তু সে কাজ এখনও হয়নি।
কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ভবানী ভট্টাচার্য বলেন, “ওই এলাকার নিকাশি-সমস্যা দ্রুত
মেটানো হবে।”