এই গর্তেই তলিয়ে গিয়েছেন অজয় মুখোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
ইসিএলের কেন্দা এরিয়ার পরিত্যক্ত ওয়েস্ট কেন্দা খোলামুখ খনির একাংশে আগুন নেভানোর পরে, ফাটল ভরার কাজ চলাকালীন গর্তে তলিয়ে গিয়েছিলেন সিনিয়র ওভারম্যান অজয় মুখোপাধ্যায়। শনিবার বিকেল পর্যন্ত তাঁকে উদ্ধার করা যায়নি। উদ্ধারকাজে দেরির অভিযোগ করেছেন পরিবারের লোকজন।
অজয়ের পিসতুতো ভাই রথীন মুখোপাধ্যায় জানান, শুক্রবার বিকেল সওয়া ৫টায় ঘটনাটি ঘটে। অথচ, সাড়ে ৯টা নাগাদ মাটি কেটে উদ্ধারকাজ শুরু হয়। সে দিনের মতো কাজ শেষ হয়ে যায় রাত ১টায়। আবার শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে মাটি কেটে উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। অজয়ের শ্যালক প্রভাতেন্দু গোস্বামী ও অজয়ের আর এক সম্পর্কিত দাদা সজল চট্টোপাধ্যায়দের অভিযোগ, “উদ্ধারকাজে গাফিলতির কারণেই সম্ভবত অজয় আরও গভীরে তলিয়ে গিয়েছে।”
ঘটনাস্থলে শনিবার সকালে যান জামুড়িয়ার বিধায়ক হরেরাম সিংহ, সিপিএম-এর পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়, কোলিয়ারি মজদুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক চণ্ডীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়েরা। হরেরাম ও চণ্ডীচরণ জানান, খোলামুখ খনি লাগোয়া এলাকায় অবেধ খননের জেরেই ‘পট হোল’ তৈরি হয়েছিল। তাতে বাতাস ঢোকায় কয়লার স্তর অক্সিজেনের সংস্পর্শে আসে। এর জেরে, আগুন ধরে গিয়েছে। ইসিএল শুক্রবার রাত থেকে একটি ৪০০ অশ্বশক্তির মাটি কাটার যন্ত্রের সাহায্যে কাজ করায় দেরি হয়ে গিয়েছে।
গৌরাঙ্গের দাবি, “এই এলাকায় ভূগর্ভেও কাজ হয়েছে। এমন জায়গায় কয়লা স্তরে কোথাও আগুন লাগলে বিধি মেনে প্রথমে ‘সিরিয়াল ব্লাস্টিং’ করে সেই জায়গা বসিয়ে দেওয়া দরকার। তার পরে ভারী যন্ত্র নামিয়ে ছাই, মাটি দিয়ে এলাকাটি ঢাকা দিতে হয় অথবা কয়লা কেটে তুলে নিতে হয়। কিন্তু তা করা হয়নি।”
এ দিকে, শনিবার সকালে কেন্দা গ্রাম বাঁচাও কমিটি পুনর্বাসনের দাবিতে মিছিল করে। কমিটির সভাপতি বিজু বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, নিউ কেন্দা কোলিয়ারির এজেন্টের হাতে দাবিপত্রও দেওয়া হয়।
যদিও উদ্ধারকাজে গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায়। তাঁর বক্তব্য: “ওয়েস্ট কেন্দা খোলামুখ খনির একাংশে আগুন লাগার পরে, ডিজিএমএস-এর নির্দেশ অনুযায়ী, আগুন নেভানো হয়। তার পরে, ফাটল ধরা জায়গাগুলিতে ছাই, মাটি ভরাট করার কাজ চলছিল। এক জন অভিজ্ঞ সিনিয়র ওভারম্যান কী ভাবে তলিয়ে গেলেন, তা খতিয়ে দেখে হচ্ছে। সংস্থা শ্রমিক-নিরাপত্তায় সব বিধি মেনে চলে।” পাশাপাশি, অজয়ের মেয়েকে চাকরিতে নিয়োগ করা হয়েছে বলে জানান কেন্দা এরিয়ার জেনারেল ম্যানেজার
জেএন বিসওয়াল।