সুদেবচন্দ্র দে ও রেখা দে।
ঘরের মধ্যে বাবা-মা-ভাইকে পুড়তে দেখার আতঙ্ক সামলে উঠতে পারছে না মন্তেশ্বরের বাঘাসনের ১১ বছরের কিশোরী। বুধবার তাঁকে কাটোয়া হাসপাতাল, পরে শিয়ালদহের বি আর সিংহ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বাড়িতে যান চাইল্ডলাইনের প্রতিনিধিরা। তবে আরপিএফের ওই কনস্টেবল কেন সপরিবার মৃত্যু বেছে নিলেন, তা এ দিনও নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ।
বাড়ির দোতলার যে বন্ধ ঘরে আগুনে পোড়া বাবা, মা এবং আট বছরের ভাইয়ের দেহ মিলেছিল, সেখান থেকেই মঙ্গলবার ভোরে উদ্ধার করা হয় ওই কিশোরীকে। আত্মীয়দের দাবি, দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে আলমারি দিয়ে ঠেসে দেওয়া ছিল। ওই কিশোরীই এক আত্মীয়কে ফোন করে ঘটনার কথা জানায়। প্রতিবেশীদের দাবি, মন্তেশ্বর প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসার পর থেকে বাঘাসনের বাড়িতে কখনও ঘুমিয়ে, কখনও চুপচাপ বসে রয়েছে সে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন তাঁকে মালডাঙা এলাকায় তাকে এক শিশু চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান জ্যাঠা বাসুদেব দে। মনোজিৎ মণ্ডল নামে ওই চিকিৎসকের দাবি, মেয়েটির শরীরের নানা জায়গায় পোড়ার ক্ষত রয়েছে। শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যাও আছে। ঠিকমতো চোখও সে খুলতে পারছে না। ওই চিকিৎসক মেয়েটিকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন। এর পরেই তাকে প্রথমে কাটোয়ার একটি হাসপাতালে, পরে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশও কিশোরীকে তেমন জিজ্ঞাসাবাদ করেনি এ দিন।
মঙ্গলবারই জেলা পুলিশের কর্তারা অসুস্থ কিশোরীর কাউন্সেলিং করার জন্য জেলা সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার দফতরকে জানান। চাইল্ডলাইনের দু’জন প্রতিনিধি বাড়িতে গিয়ে কিশোরীর দেখা না পেলেও পরিবারের সদস্যদের জানান, কী ভাবে তার সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে।
তদন্তকারীদের দাবি, আগুন যে ভিতর থেকে লাগানো হয়েছিল তা মোটামুটি নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে। ঘরের বাইরে কোনও কার্বন জমার চিহ্ন পাওয়া যায় নি। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘কিছু বিষয় নিশ্চিত হতে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। শীঘ্রই ওই বিশেষজ্ঞদের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করবেন।’’ মেয়েটি সুস্থ হলে তার সঙ্গেও কথাবার্তা বলবে পুলিশ। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ধ্রুব দাস জানান, তদন্ত চলছে।