প্রচারে শিক্ষক। নিজস্ব চিত্র
স্কুলের পড়ুয়ারা তামাকজাত দ্রব্যে আসক্ত হয়ে পড়ছে। গ্রাম থেকে শহর—নানা স্কুলে এই প্রবণতার দেখে চিন্তায় কাটোয়ার ইসলামপুর গোপেন্দ্র বালো বিদ্যায়তনের প্রধান শিক্ষক রামজীবন হাজরা। তাই তাঁর স্কুলের পড়ুয়াদের মাদক থেকে দূরে রাখতে পথে নেমেছেন তিনি।
বেশ কিছু দিন ধরে ইসলামপুর গ্রামের দোকানে দোকানে ঘুরছেন রামজীবনবাবু। নাবালকদের তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি না করার অনুরোধ করছেন করজোড়ে। এলাকাবাসীর কাছে আর্জি জানাচ্ছেন, রাস্তাঘাটে অল্প বয়সিদের তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার করতে দেখলেই তাঁরা যেন বাধা দেন। তাঁর এই উদ্যোগে আপ্লুত এলাকাবাসী এবং পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা। রামজীবন বলেন, “নাবালক পড়ুয়ারা যে ভাবে তামাকে আসক্ত হয়ে পড়ছে, তা খুবই উদ্বেগের। এই প্রবণতা বন্ধ না করতে পারলে ভবিষ্যৎ খুবই অন্ধকার। সে কারণেই এই কাজ করছি।”
কাটোয়া ২ ব্লকের অগ্রদ্বীপ পঞ্চায়েতের ইসলামপুর গ্রামের এই স্কুলটি বহু পুরনো। মাধ্যমিক স্তরের ওই স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা কম-বেশি ২৫০। বেশ কয়েক বছর ধরেই কিছু পড়ুয়ার মধ্যে তামাক সেবনের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, জানাচ্ছেন স্থানীয়দের অনেকেই। তাঁদের দাবি, স্কুলের আশপাশে নির্জন জায়গায় এবং রাস্তায় অল্পবয়সিদের ধূমপান করতে দেখা যায়।
ইসলামপুর গ্রামের ব্যবসায়ী সোলেমান শেখ ও কালাম শেখ বলেন, “আমাদের গ্রামে ছোট মুদির দোকান রয়েছে। বিড়ি, সিগারেট ভালই বিক্রি হয়। এত দিন পড়ুয়ারাও বিড়ি-সিগারেট কিনত। আমরাও দিয়ে দিতাম। গত এক সপ্তাহ ধরে গ্রামের স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমাদের কাছে এসে নাবালকদের তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি না করার অনুরোধ করছেন। বিষয়টির গুরুত্ব বুঝতে পেরে নাবালকদের আর ওই সব জিনিস বিক্রি করছি না। মাস্টার মশাইয়ের এই উদ্যোগে আমরা খুশি।”
ওই স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী অনন্যা মণ্ডল ও দশম শ্রেণির ছাত্র কুন্তল মণ্ডল বলে, “হেড স্যর আমাদের নানা ভাবে সচেতন করেন। তামাক ব্যবহার করলে শরীরের কী ক্ষতি হয়, তা বোঝান। আমরা স্কুল থেকেই মাদক-বিরোধী প্রচার দেখে বড় হচ্ছি। স্কুলের বাইরে বন্ধুদের এ নিয়ে সচেতন করি।”
অগ্রদ্বীপ পঞ্চায়েতের প্রধান নিতাইসুন্দর মুখ্যোপাধ্যায় বলেন, “তামাক-বর্জিত সমাজ গড়ে তুলতে প্রধান শিক্ষকের এই উদ্যোগ খুবই প্রশংসনীয়।”