সেতু সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে প্রায় সাড়ে ছ’মাস আগে। শেষ হওয়ার কথা ছিল মে মাসে। কিন্তু তা এখনও হয়নি। কবে শেষ হবে, নিশ্চিত ভাবে জানাতে পারছেন না জেলা প্রশাসন ও পূর্ত দফতরের কর্তারা। পুরুলিয়া ও পশ্চিম বর্ধমানের মধ্যে ডিসেরগড়ে নেতাজি সুভাষ সেতু পারাপার করতে গিয়ে নাজেহাল হচ্ছেন দুই জেলার কয়েক হাজার বাসিন্দা। নিত্য যানজটে হয়রান হচ্ছেন চালকেরা। পুজোর মুখে বাড়ছে সমস্যা। পূর্ত দফতরের অবশ্য আশ্বাস, পুজোর আগেই কাজ শেষ হবে।
পশ্চিম বর্ধমানের কুলটি, বরাকর, ডিসেরগড় থেকে পুরুলিয়ার নিতুড়িয়া, রঘুনাথপুর যাতায়াতে ভরসা এই সেতু। প্রায় ১৭ বছর আগে ডিসেরগড়ে দামোদরের উপরে সেতুটি গড়া হয়েছিল। বেহাল হয়ে পড়ায় বছরখানেক আগে সেতুটি সংস্কারের দাবি তোলেন এলাকাবাসী।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সেতুটির অবস্থান পুরুলিয়ায় হলেও সংস্কারের দায়িত্বে রয়েছে পূর্ত দফতরের আসানসোল ডিভিশন। ডিভিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, সংস্কারের খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ৯৮ লক্ষ টাকা। কাজের দরপত্র ডেকে বরাতপ্রাপ্ত ঠিকা সংস্থাকে ৬ মার্চ কাজ শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয়। কাজ শেষ করার সম্ভাব্য সময়সীমা ধরা হয়েছিল ৬ মে। কিন্তু সেই কাজ এখনও শেষ করা যায়নি। ফলে, কয়েক মাস ধরে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে সেতুতে। সমস্যায় পড়ছেন যাত্রী ও গাড়ি চালকেরা।
ডিসেরগড়ের বাসিন্দা তথা খনিকর্মী রঞ্জিত পাসোয়ান বলেন, ‘‘নিয়মিত সেতু পেরিয়ে নিতুড়িয়ায় খনিতে কাজে যেতে হয়। রোজ যানজটে আটকে পড়ছি। খুব সমস্যা হচ্ছে।’’ স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুজোর বাজারের জন্য দু’দিকের বহু মানুষ আসানসোল বা পুরুলিয়ায় যান। ঢিমেতালে সংস্কারের কাজ চলায় তাঁরা ভুক্তভোগী হচ্ছেন বলে অভিযোগ।
পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন কলকাতা থেকে আসানসোল হয়ে পুরুলিয়াগামী শতাধিক সরকারি ও বেসরকারি বাস চলাচল করে এই সেতু দিয়ে। বিপাকে পড়ছেন বাসের চালকেরা। দু’দিকের ব্যবসায়ীদের অনেকের অভিযোগ, সেতুতে কাজের জন্য পণ্যবাহী ট্রাক চলাচলও প্রায় বন্ধ। ঘুরপথে পণ্য আনতে হওয়ায় ব্যবসা মার খাচ্ছে। কুলটির বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দুই জেলার প্রশাসনকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে আবেদন করেছি।’’
পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘সেতুটি পুরুলিয়াতে হলেও কাজ করছে পূর্ত দফতরের আসানসোল ডিভিশন। ফলে, কবে কাজ শেষ হবে তা তারাই বলতে পারবে।’’ শনিবার সেতুর পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন কাজের দায়িত্বে থাকা পূর্ত দফতরের এক ইঞ্জিনিয়ার। দফতরের আসানসোল ডিভিশনের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অতনু সেন বলেন, ‘‘বৃষ্টির জন্য কাজে বিঘ্ন ঘটেছে। তবে পুজোর আগেই কাজ শেষ করা হবে।’’