—প্রতীকী চিত্র।
উপন্যাস-কবিতার বইয়ের তুলনায় গীতার বিক্রি বেড়েছে বলে দাবি জামালপুরে সদ্য অনুষ্ঠিত পূর্ব বর্ধমান জেলা বইমেলায় আসা বিভিন্ন প্রকাশনী সংস্থার। হঠাৎ গীতা বিক্রি বেড়ে যাওয়ার নেপথ্যে কি রামমন্দিরের উদ্বোধন? প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক মহলে। গীতা বিক্রি বাড়ায় খুশি সঙ্ঘ পরিবার ও বিজেপি।
ডিসেম্বরের শেষে ব্রিগেডে গীতাপাঠের কর্মসূচি ছিল। রাম মন্দির উদ্বোধনের আগে ‘ঘরে ঘরে গীতাপাঠে’ ডাক দিয়েছিল গেরুয়া শিবির।আগামী সোমবার অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধন। সঙ্ঘ পরিবারের কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে মন্দির দর্শনের আর্জি জানাচ্ছেন। এ সবের প্রভাবেই জেলা বইমেলায় গীতা বিক্রি বেড়েছে বলে মনে করছেন সঙ্ঘ এবং বিজেপির নেতারা। যদিও তৃণমূলের দাবি, এর সঙ্গে মানুষের ধর্মবিশ্বাস জড়িয়ে রয়েছে। রাজনীতির সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই।
এ বার জেলা বইমেলায় মোট ৪৭টি স্টল ছিল। এক প্রকাশনা সংস্থার কর্মী বিজয় সাহা বলেন, “পুরুলিয়ার থেকেও পূর্ব বর্ধমানে বই বিক্রি কম হয়েছে। তবে আমাদের স্টল থেকে গীতা বেশি বিক্রি হয়েছে। পাশের একটি প্রকাশনী সংস্থা আমাদের চেয়েও বেশি গীতা বিক্রি করেছে।” বইমেলায় আর একটি প্রকাশনী স্টলের কর্তা বিনো তারণের দাবি, “বই মেলায় এসে বুঝলাম, মানুষ এখন গীতাপাঠের দিকে ঝুঁকছে। বই মেলায় ২৫০টির মতো গীতা
বিক্রি করেছি।”
কলকাতার কলেজ স্কোয়ারের একটি প্রকাশনী সংস্থার কর্মীরা দাবি করেন, তাঁদের স্টল থেকেও ২০০টির বেশি গীতা বিক্রি হয়েছে। আরও এক প্রকাশনীর স্টলের দায়িত্বে থাকা তরুণ দাসের দাবি, “বিভিন্ন গ্রন্থাগার নানা রকমের বই কিনেছে। তবে সাধারণ মানুষের মধ্যে গীতা কেনার আগ্রহ বেশি ছিল।”
সঙ্ঘের পূর্ব বর্ধমানের কার্যকর্তা শান্তি মাল বলেন, “কয়েক দিন পরেই রামমন্দিরের উদ্বোধন। সব জায়গাতেই তা নিয়ে উন্মাদনা বেড়েছে। এর ফলে গীতাপাঠেরও প্রবণতা বাড়ছে। সে কারণেই গীতা বিক্রি বেশি হয়েছে। খোঁজ নিলে দেখা যাবে, দোকানেও গীতা বেশি বিক্রি হচ্ছে।”
বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি আশিস পাল মনে করেন, “এ রাজ্যে রাজনৈতিক সঙ্কট শুরু হয়েছে। খুনোখুনি, চুরি, দুষ্কর্ম লেগেই রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে গীতাপাঠই যে শান্তি, সেটা মানুষ বুঝতে পারছেন।”
যদিও এই তত্ত্ব মানতে নারাজ তৃণমূল বিধায়ক অলোক মাঝি। তাঁর বক্তব্য, “গীতা বিক্রির মধ্যে কেউ কেউ রাজনীতি খুঁজতে চাইছেন। সেটা একেবারেই ঠিক নয়। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা গীতা কিনেছেন। এটা কাজে লাগিয়ে কিছু মেকি
হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ও ব্যক্তি অবান্তর কথা বলে চলেছেন।’’
বর্ধমানের নাট্যকার দেবেশ ঠাকুরের মন্তব্য, “গীতার সারমর্ম বোঝার জন্য, না কি রাজনৈতিক উন্মাদনার জেরে মানুষ গীতা কিনছেন, তা বুঝতে হবে।”