কলকাতার ব্যবসায়ী সব্যসাচী মণ্ডল। —ফাইল চিত্র।
কলকাতার ব্যবসায়ী সব্যসাচী মণ্ডলকে খুন করার জন্য অনুতাপ হচ্ছে বলে দাবি অভিযুক্ত মহম্মদ জানিসর আলম ওরফে রিকির। তাঁর আরও দাবি, এই হত্যাকাণ্ডের মূল চক্রীরা টাকার জোরে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। যদিও রিকির দাবি মানতে নারাজ তদন্তকারীরা। তাঁদের মতে, সব্যসাচীকে খুনের ঘটনায় ধৃত রিকি এবং মহম্মদ সাদ্দাম ছাড়া সাদাম্মের মামাও জড়িত। এমনকি, সাদ্দামের মামাকেই এই হত্যাকাণ্ডের অন্যতম চাঁই বলে দাবি তদন্তকারীদের।
বুধবার সংবাদমাধ্যমের কাছে নিজের অনুতাপের কথা জানিয়েছেন রিকি। তিনি বলেন, ‘‘টাকার লোভে (খুন) করে ফেলেছি। এখন খুবই খারাপ লাগছে। তবে, আমার দুকূল গেল। টাকাও পেলাম না আবার খুনের অভিযোগে জেল খাটতে হচ্ছে। আর যারা আমাকে দিয়ে এই জঘন্য কাজ করিয়েছে, তারা দিব্যি টাকার জোরে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে।’’
পুলিশ সূত্রে খবর, রিকি, সাদ্দাম এবং সাদ্দামের মামার এ ধরনের অপরাধের রেকর্ড রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের মতে, যে নৃশংসতায় সব্যসাচীকে খুন করা হয়েছে, তা একমাত্র পাকামাথার অপরাধীর পক্ষেই করা সম্ভব। রিকি এবং সাদ্দামদের পাকড়াও করার দিন সাদ্দামের মামারও নাগাল পেয়েছিল পুলিশ। কিন্তু অল্পের জন্য পালিয়ে যেতে সক্ষম হন তিনি। সাদ্দামকে জেরা করে তাঁর মামার হদিশ পাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
সাদ্দামের মামাকে ধরা গেলে সব্যসাচীকে খুনের পরিকল্পনা নিয়ে আরও তথ্য পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের দাবি, খুনের সময় সাদ্দামের মামা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বলে রিকিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে। একই সঙ্গে সব্যসাচীকে খুনে সুপারি দেওয়া তাঁর ‘অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ’দের খোঁজেও তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
সূত্রের খবর, খুনের ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী সব্যসাচীর বন্ধু রাজবীর সিংহ মঙ্গলবার বর্ধমান সংশোধনাগারে টিআই প্যারেডে রিকিকে শনাক্ত করেন। বুধবার রিকিকে আদালতে তোলা হলে তাঁর ৭ দিন পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন সিজেএম। পুলিশের কাছে অবশ্য রিকির দাবি, সম্ভবত ঘটনার দিন রাতেই সব্যসাচীকে খুনের বরাত দেওয়া তাঁর ঘনিষ্ঠরা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। তাঁরা অস্ট্রেলিয়া বা অন্য দেশে আত্মগোপন করতে পারেন বলেও রিকির দাবি।