আসানসোলে পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ের সামনে ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের। সোমবার। ছবি: পাপন চৌধুরী
পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের ধস্তাধস্তি বাধল আসানসোলে। সোমবার বিজেপির এই কর্মসূচির জেরে জিটি রোডে যানজটও তৈরি হয়। সমস্যায় পড়েন যাত্রীরা। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল পুলিশের সঙ্গে দেখা করে নিজেদের দাবি পেশ করেন।
এ দিন রাজ্য জুড়ে পুলিশ সুপার এবং পুলিশ কমিশনারদের কার্যালয়ে অবস্থান-বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েছিল বিজেপি। সে কারণে সকাল থেকেই আসানসোলে পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ের সামনে জিটি রোডের ধারে ম্যারাপ বেঁধে অবস্থান শুরু হয়ে যায়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে পারে আশঙ্কা করে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু বিজেপি কর্মী-সমর্থক অবস্থান মঞ্চে জড়ো হতে শুরু করেন। জিটি রোডের ধারে ধর্না মঞ্চের সামনে তাঁরা জমায়েত করায় রাস্তার অনেকটা অংশ আটকে যায়। যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হয়। তীব্র যানজট তৈরি হয়। ভিড়ের মাঝে দাঁড়িয়ে পড়তে দেখা যায় অ্যাম্বুল্যান্স, স্কুলের পড়ুয়া বোঝাই নানা গাড়িকেও। জিটি রোড যানজট মুক্ত করতে পুলিশকেও হিমসিম খেতে হয়। ঘণ্টাখানেক ধরে এই পরিস্থিতি চলে।
দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ বিজেপি নেতারা পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে যাওয়ার ডাক দেন। কয়েকশো বিজেপি কর্মী-সমর্থক সে দিকে ধেয়ে যান। কার্যালয়ের গেটে আগে থেকেই লোহার ব্যারিকেড বেঁধে রাখা ছিল। প্রচুর পুলিশকর্মীও মোতায়েন ছিলেন। বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা সেই ব্যারিকেড ভেঙে কার্যালয় চত্বরে ঢোকার চেষ্টা করেন। পুলিশ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে ধস্তাধস্তি বেধে যায়। বেশ কিছুক্ষণ গোলমাল চলে। তবে প্রচুর পুলিশকর্মী মোতায়েন থাকায় কেউ ভিতরে ঢুকতে পারেননি। শেষমেশ বিজেপির রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সাত জনের একটি প্রতিনিধি দল পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করতে যায়।
প্রতাপবাবু অভিযোগ করেন, রাজ্যের নানা প্রান্তের মতো পশ্চিম বর্ধমানেও বিজেপি কর্মীদের উপরে অত্যাচার হচ্ছে। কাঁকসা, ধবনি, বারাবনিতে বেশি অত্যাচার হচ্ছে। তাঁদের অভিযোগ, কর্মীদের গুলি করা হচ্ছে, ঘরে-ঘরে হুমকি পোস্টার সেঁটে দেওয়া হচ্ছে, মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে কর্মীদের জেলে পাঠানো হচ্ছে। বিজেপির পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের অভিযোগ, ‘‘জেলায় ৪০ জন বিজেপি কর্মীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।’’
পুলিশ কমিশনার দেবেন্দ্র প্রকাশ সিংহ জানান, তিনি সদ্য কমিশনার হিসেবে যোগ দিয়েছেন। বিশদ খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস তাঁর।