কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
প্রতিষ্ঠা দিবসের উদ্যাপন অনুষ্ঠানেও অশান্তি পিছু ছাড়ল না কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের। মারধর, হুমকির অভিযোগ উঠল বহিরাগতদের বিরুদ্ধে। উপাচার্যের অভিযোগ, কেউ কেউ স্লোগান দেন ‘‘এই বিশ্ববিদ্যালয়কে আরজি কর বানিয়ে দেব।’’ যদিও গন্ডগোলের কথা অস্বীকার করেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। যদিও এই ঘটনায় আটক বা গ্রেফতারির কোনও খবর পাওয়া যায়নি।
বেশ কিছু দিন ধরেই অশান্তির বাতাবরণ কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে। টিএমসিপি-র অভিযোগ, ছাত্র ভর্তির টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আইনি লড়াইয়ের খাতে খরচ করা হয়েছে। ব্যয় হওয়া প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে ফেরত দেওয়ার দাবি নিয়ে চলে আন্দোলন। টিএমসিপি নেতৃত্বের দাবি, কখন, কোথায়, কী কারণে এই টাকা খরচ করা হয়েছে— তা শ্বেতপত্র প্রকাশ করে উপাচার্যকে জানাতে হবে। পরিস্থতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে, কয়েক দিন আগে নিজের বাড়িতে বসে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ করতে হয়েছে উপাচার্য দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনি এ নিয়ে তিনি চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে। তার মধ্যেই শুক্রবারের এই ঘটনা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন উপাচার্য। কিন্তু, আচমকাই এক দল ‘বহিরাগত’ দুষ্কৃতী ঢুকে পড়ে অনুষ্ঠান বানচাল করার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। শিক্ষাকর্মীদের গায়ে হাত তোলারও অভিযোগ উঠেছে। এক প্রতিবন্ধী মহিলা শিক্ষাকর্মীকে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। উপাচার্য বলেন, ‘‘ওই শিক্ষাকর্মীর ক্র্যাচ ফেলে দেওয়া হয়। দুষ্কৃতীদের গলায় স্লোগান ছিল, ‘‘আরজি কর বানিয়ে দেব।’’’
গন্ডগোলের খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিল আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ। উপাচার্য জানান, ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রী এবং উচ্চশিক্ষা দফতরকেও এই বিষয়টি সম্পর্কে জানানো হয়েছে। যদিও টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি অভিনব মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অশিক্ষক কর্মীরাই বিক্ষোভরত ছাত্রছাত্রীদের উপর হামলা চালান।’’ এই ঘটনা নিয়ে ডিসিপি (মধ্য) ধ্রুব দাস বলেন, ‘‘খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক।’’ তিনি জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে।